- এপ্রিল ২৪, ২০২০
- শীর্ষ খবর
- 1957
নিউজ ডেস্কঃ হৃদ্রোগের চিকিৎসা চলছিল একটি বেসরকারি হাসপাতালে। চিকিৎসা চলাকালে জানা যায়, রোগী ইতালিপ্রবাসী। করোনাভাইরাস সংক্রমণ সন্দেহে তাৎক্ষণিকভাবে ‘রেফার্ড’ করা হয় সিলেটে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত সরকারি হাসপাতাল শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। তখন মধ্যরাত। হাসপাতালের ফটক বন্ধ। বাইরে থেকে ফটক খোলার আকুতি করছিলেন রোগীর স্বজনেরা, কিন্তু ফটক আর খোলা হয়নি। বলা হয়েছিল সকালবেলা রোগী নিয়ে আসতে। বাড়ি ফিরে সকাল হওয়ার আগেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন রোগী।
ঘটনাটি সিলেট নগরীর এক প্রবাসী পরিবারের। রোগীর নাম মীর আহমদ শাহীন খান (৫০)। স্বজনেরা জানিয়েছেন, ইতালিতে প্রায় ১২ বছর ছিলেন শাহীন খান। সেখানে দুই বছর আগে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। হার্টে অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হন। ইতালিতে করোনাসংক্রমণের প্রায় এক মাস আগে দেশে ফেরেন তিনি। দেশে স্ত্রী ও এক মেয়ে নিয়ে ছিল তাঁর পরিবার। গত বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে বুকে ব্যথা অনুভব করেন। নগরীর ওয়েসিস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। রাত নয়টার দিকে ইতালিফেরত জেনে চিকিৎসকেরা করোনাসংক্রমণ সন্দেহ করেন। তাঁরা সরাসরি শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দিয়ে রোগীকে ছাড়পত্র দেন।
শাহীন খানের ভাগনে নাহিদ আহমদ বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে আমরা একটি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে যাই, কিন্তু হাসপাতালের ফটক বন্ধ পাই। প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থান করেও ফটক খোলা সম্ভব হয়নি। ফটকের বাইরে থেকে হাসপাতালে কর্তব্যরত ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তাঁরা সকালে রোগীকে নিয়ে আসার পরামর্শ দেন, কিন্তু তাঁকে নিয়ে আর আমাদের সকাল হলো না। হাসপাতাল থেকে রোগীকে বাড়িতে নিয়ে যাই, সারা রাত রোগী ছটফট করেন। শুক্রবার সকাল পৌনে আটটায় তিনি মারা যান।’
ওয়েসিস হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কেফায়েত উল্লাহর মুঠোফোনে শুক্রবার বেলা তিনটার দিকে যোগাযোগ করলে একজন নারী ফোন ধরে জানান, তিনি ঘুমে আছেন। জনসংযোগ দপ্তরে ফোন করলে চিকিৎসকের বরাত দিয়ে কর্তব্যরত এক কর্মকর্তা বলেন, ওই রোগীর করোনা উপসর্গ দেখে সরকারি হাসপাতালে ভর্তির নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।
হাসপাতাল ফটক বন্ধ ও রোগী ফেরত পাঠানোর বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেন শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সুশান্ত মহাপাত্র। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না, কেউ কিছু জানাননি। রাতে কারা দায়িত্বে ছিলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।’
নগরীর বেসরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী অযথা পাঠানো হয় দাবি করে সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল থেকে করোনা উপসর্গ সন্দেহে রোগী পাঠানো বেড়ে যাচ্ছে। আজ শুক্রবার সকালে একজন রোগীকে পাঠানো হয়। তাৎক্ষণিকভাবে দেখে আবার ফেরত পাঠানো হয়।সুত্র: প্রথম আলো
Comments are closed.