• মে ১৪, ২০২০
  • জাতীয়
  • 642
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের মৃত্যু করোনায়

নিউজ ডেস্কঃ শিক্ষাবিদ ও জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের মৃত্যুর পর নমুনা পরীক্ষা শেষে তার দেহে করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে তার সন্তান আনন্দ জামান বলেন, “সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের চিকিৎসকরা উনার শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহের পর কোভিড-১৯ এর পরীক্ষা করেন। ফলাফল পজিটিভ এসেছে।”

৮৩ বছর বয়সী এই জাতীয় অধ্যাপক বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মৃত্যুবরণ করেন।

এদিকে, নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান মারা যাওয়ার তথ্য নিশ্চিতের পর তার মরদেহ বাংলা একাডেমিতে নেয়াসহ অন্যান্য কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আনন্দ জামান।

প্রাথমিকভাবে রাজধানীর আজিমপুরে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বাবার কবরের পাশে তাকে দাফনের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে তা পরিবর্তিত হতে পারে বলে জানান আনন্দ জামান। তিনি বলেন, শুক্রবার এ বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত হবে। আমাদের ইচ্ছা থাকবে দাদার কবরের পাশে তাকে দাফন করার। তবে সরকারের স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী যে সিদ্ধান্ত হবে সে অনুযায়ী দাফন হবে।

তিনি শুক্রবারের সব কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান।

এরআগে আনিসুজ্জামানের মরদেহ বাংলা একাডেমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় পরিবার।

তিনি হৃদরোগ, কিডনি ও ফুসফুসে জটিলতা, পারকিনসন্স ডিজিজ এবং প্রোস্টেটের সমস্যা ভুগছিলেন। শেষ দিকে তার রক্তে ইনফেকশনও দেখা দিয়েছিল। গত ২৭ এপ্রিল থেকে তিনি ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৯ মে তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।

আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি, অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার বসিরহাটে। তিনি চট্টগ্রাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃতী শিক্ষক। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতে গিয়ে বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে কাজ করেন। বর্তমানে বাংলা একাডেমির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।

বাহাত্তরের কুদরাত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশনের সদস্য আনিসুজ্জামান আমৃত্যু ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও তিনি শিক্ষকতা করেছেন।

দীর্ঘ কর্মজীবনে শিক্ষকতা, গবেষণা ও মৌলিক সাহিত্য রচনার পাশাপাশি একক ও যৌথভাবে অসংখ্য গ্রন্থ সম্পাদনা করেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অবদানের জন্য ১৯৮৫ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে; সাহিত্যে অবদানের জন্য ২০১৫ সালে তিনি পান স্বাধীনতা পুরস্কার।