- মে ২০, ২০২০
- জাতীয়
- 569
নিউজ ডেস্কঃ তামাক উৎপাদন এবং তামাকজাত পণ্য বিক্রির বিষয়ে অবস্থান তুলে ধরেছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বুধবার এক বিবৃতির মাধ্যমে মন্ত্রণালয় বলেছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ শিল্প চালু রাখা যুক্তিসঙ্গত।
তবে এর আগে বুধবার সকালে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন সাংবাদিকদের বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্যের সরবরাহ, বিপণন ও বিতরণ সাময়িকভাবে বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কয়েক ঘণ্টা না পেরুতেই তার মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের বিবৃতি এলো।
মঙ্গলবার তামাক পণ্য উৎপাদন ও বিক্রি বন্ধে নির্দেশ দিতে চিঠির মাধ্যমে শিল্প মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, তামাক বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প। এ শিল্পের সঙ্গে দেশের হাজার হাজার প্রান্তিক চাষি এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি জড়িত। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও শিল্পোন্নত দেশসহ গোটা বিশ্বে এখন পর্যন্ত তামাক শিল্প চালু রয়েছে। বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআই) ক্ষেত্রে এককভাবে এ শিল্পের অবদান সবচেয়ে বেশি। আমাদের জাতীয় রাজস্ব আয়ের উল্লেখযোগ্য অংশ এ শিল্পখাত থেকে আসে।
এ শিল্প হুট করে বন্ধ করে দেওয়া হলে, একদিকে যেমন দেশ বিরাট অঙ্কের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে, অন্যদিকে তেমনি বিপুল পরিমাণে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগও বন্ধ হয়ে যাবে। আবার তামাক পাতা না কিনলে প্রান্তিক চাষিরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত আমাদের দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে একটি নেতিবাচক ধারণা দেবে। ফলে আমাদের বৈদেশিক বিনিয়োগ প্রবাহ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ধূমপান কিংবা তামাক জাতীয় পণ্যের ব্যবহার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হলেও এর সেবনকারীরা তা জেনে শুনেই সেবন করছেন। এ শিল্প সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিলেও তারা এটি সেবন করবেন বলে মনে করে মন্ত্রণালয়। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উদ্যোগ ছাড়া শুধু সাময়িক উৎপাদন বন্ধ করে করোনা ভাইরাসকালে ধূমপান প্রতিরোধ করা যাবে না। অধিকন্তু, এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেলে কালোবাজারিরা উৎসাহিত হবে এবং আমদানি করা সিগারেটসহ তামাকজাত পণ্যের মাধ্যমে দেশ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা ও রাজস্ব আয় হারাবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল ধূমপায়ী ও তামাক জাতীয় পণ্য সেবীদের মধ্যে এটি পরিহারের জন্য প্রচার জোরদার করতে পারে।
সামগ্রিক বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ শিল্প চালু রাখা যুক্তিসঙ্গত হবে বলে মনে করে শিল্প মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি ধূমপান ও তামাক জাতীয় পণ্য সেবনের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। এক্ষেত্রে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল সময়ের চাহিদা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় মোটিভেশনাল কার্যক্রম নেবে বলে শিল্প মন্ত্রণালয় আশা প্রকাশ করছে।