- মে ২৬, ২০২০
- লাইফ স্টাইল
- 762
নিউজ ডেস্কঃ অনেকেই হয়তো গত কয়েক দিন ধরে শুনে থাকবেন যে ভিটামিন ডি আমাদের করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করতে পারে। কিন্তু আসলেই কি ভিটামিন ডি করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা করতে পারে?
আমাদের ত্বক সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে ভিটামিন ডি পায়। ভিটামিন হাড়ের বৃদ্ধি এবং শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কারণ এটি ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফেটের অন্ত্রের শোষণে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি ফ্যাট-দ্রবণীয় এবং শ্বেত রক্ত কণিকার প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি অতিরিক্ত প্রদাহজনক সাইটোকাইন থেকে বাঁচিয়ে তাদের নিয়ন্ত্রণ করে। সাইটোকাইন স্ট্রোম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার তীব্র প্রতিক্রিয়া যা ভাইরাসের পাশাপাশি শরীরের নিজস্ব কোষ এবং টিস্যুগুলো ধ্বংস করে দেয়।
কার ঝুঁকি বেশি?
দ্য ল্যানসেটে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র অনুসারে, বয়স্ক এবং কালো বর্ণের লোকেরা, যাদের ভিটামিন ডি এর পরিমাণ কম রয়েছে; তাদের করোনাভাইরাসের গুরুতর লক্ষণ থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিনের পরিপূরক থেকে উপকার পাওয়া যেতে পারে। সুতরাং, প্রবীণ এবং কালো বর্ণের লোকেরা তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে ভিটামিন ডি পরিপূরক থেকে উপকার পাবেন।
কালো ত্বকের ব্যক্তিদের মধ্যে মেলানিনের উপস্থিতি সূর্যের আলোর সংস্পর্শে ত্বকের ভিটামিন ডি তৈরির ক্ষমতা হ্রাস করে। লকডাউনের জন্য অনেকেই এখন বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। এমন অবস্থায় মানুষের মধ্যে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি বাড়তে পারে।
ল্যানসেট স্টাডি কী বলে
ল্যানসেট পেপার বিভিন্ন দেশে মৃত্যুর হারের সম্ভাব্য কারণগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি দেখতে পায়। এটি এজিং ক্লিনিকাল অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত একটি পর্যবেক্ষণ গবেষণাকে উদ্ধৃত করে যা ২ টি ইউরোপীয় দেশ থেকে প্রাপ্ত ডেটা ব্যবহার করেছিল। এটি অনুসারে, ইতালি এবং স্পেনে গড়ে ভিটামিন ডি এর মাত্রা কম। আশ্চর্যের বিষয়, এই দেশগুলোতে উত্তর ইউরোপীয় দেশগুলোর তুলনায় করোনভাইরাসে মৃত্যুর হার বেশি। উত্তর ইউরোপীয়দের মধ্যে তুলনামূলকভাবে উচ্চ মাত্রায় ভিটামিন ডি রয়েছে।
ভিটামিন ডি এর অভাবে সমস্যা
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ডি এর ঘাটতি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩%, প্রি-ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ৫% এবং স্থূল লোকদের মধ্যে ৮০% ছিল, যা উদ্বেগজনক। কারণ এগুলো করোনাভাইরাসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
নিজে নিজে ওষুধ খাবেন না
চিকিৎসকদের মতে, অতীতের গবেষণাগুলো ভিটামিন ডি এর অভাবের সঙ্গে শ্বসনতন্ত্রের সংক্রমণের সংযোগ খুঁজে পেয়েছে। ভিটামিন ডি ওষুধ হিসেবে খেলে তখন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং বিষাক্ততার ঝুঁকি কম থাকে। কিডনি এবং যকৃতের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য বিষাক্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি হতে পারে, কারণ তাদের দেহ ভিটামিন ছাড়তে সক্ষম নাও হতে পারে। সুতরাং, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ ওষুধ খাওয়ার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত। কোনোভাবেই নিজে নিজে ওষুধ খাওয়া যাবে না।