- জুন ৩, ২০২০
- শীর্ষ খবর
- 587
নিউজ ডেস্কঃ আবারও সিলেট নগরীর ৭টি বেসরকারী হাসপাতালে ঘুরে স্ট্রোক করা এক নারী চিকিৎসা না পেয়ে মারা গেছেন। মারা যাওয়া ওই মহিলা স্ট্রোক করেছিলেন, তার আইসিইউ সেবা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার পরিবারের অভিযোগ, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে শ্রীমঙ্গল থেকে এসে অ্যাম্বুলেন্সে তাকে নিয়ে একের পর এক হাসপাতাল ঘুরতে হয়েছে। তবুও কোন হাসপাতালই রোগীকে ভর্তি করেনি।
ওই মহিলার আত্মীয় মাজহারুল আলম মাসুম জানান, মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের কালিঘাট রোড এলাকার বাসিন্দা মহিলা (৭০) দীর্ঘদিন ধরে প্রেসার ও ডায়বেটিসজনিত রোগে ভুগছেন। রবিবার (৩১ মে) সন্ধ্যায় তিনি বাথরুমের ভেতর স্ট্রোক করেন। তখন স্থানীয় চিকিৎসক তাকে দেখে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে ভর্তি করার পরামর্শ দেন। তখন তারা সাথে সাথে রোগীকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে মৌলভীবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। কিন্তু মৌলভীবাজারের কোন হাসপাতালে আইসিইউ সেবা না থাকায় তারা রোগীকে অক্সিজেন দিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। সিলেটে প্রবেশ করেই তারা রোগীকে নিয়ে দক্ষিণ সুরমার নর্থ ইস্ট হাসপাতালে যান। সেখানে বার বার বলা সত্ত্বেও কোন চিকিৎসক রোগীর কাছে আসেননি। এমনকি রোগীর অক্সিজেন শেষ হয়ে যাচ্ছে বললেও তারা সাড়া দেন নি।
তিনি জানান, রোগীর অবস্থা ক্রমশ খারাপ হতে দেখে তারা নর্থ ইস্ট হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে একে একে সিলেট নগরীর ওয়েসিস হসপিটাল, আল হারামাইন হসপিটাল, ইবনেসিনা হাসাপাতাল, মাউন্ট এডোরা, উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হসপিটাল এবং নুরজাহান হসপিটালে নিয়ে যান। কিন্তু কোনটিতেই রোগীকে ভর্তি করা দূরের কথা কোন চিকিৎসক রোগীর কাছেও আসেননি।
৭টি হাসপাতাল ঘুরে শংকটাপন্ন রোগীকে নিয়ে ওসমানী হাসপাতালের দিকে রওয়ানা হয় অ্যাম্বুলেন্স। রাত সোয়া ১টার দিকে ওসমানী হাসপাতালের গেইটে পৌঁছামাত্র ওই মহিলা মারা যান। হাসপাতালের ইর্মাজেন্সিতে কর্তব্যরত চিকিৎসক রোগীকে মৃত ঘোষণা করেন।
দেশের সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার সরকারি নির্দেশনা থাকার পরও শংকটাপন্ন অবস্থায় সিলেটের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল ভর্তি না করায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মারা যাওয়া রোগীর পরিবারের স্বজনরা।
এ বিষয়ে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার কথা চিন্তা করছে মৃতের পরিবারের সদস্যরা।
এরআগে, গত ৩১ মে দীর্ঘদিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভোগা নগরীর কাজীটুলা এলাকার বাসিন্দা এক নারী অসুস্থ হলে সিলেটের ৬টি বেসরকারী হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা পাননি। পরে ওসমানী হাসপাতালে যাওয়ার পথে তারও মৃত্যু হয়।
এ ব্যপারে সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মন্ডলের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেন নি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে এধরণের অভিযোগ আসে, তবে লিখিতভাবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রত্যেকটি বেসরকারি হাসপাতালে নির্দেশনা দেয়া আছে রোগীদের পর্যাপ্ত সেবা দেয়ার। কেউ সেটি না দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগে সিলেটের কাজীটুলা এলাকার বাসিন্দা এক নারী কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে মারা যাওয়ার খবর পেয়ে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোতে সতর্ক করে চিঠি দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কোন অভিযোগ এলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এছাড়া তিনি গুরুতর অসুস্থ রোগীদের একের পর এক বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে না ঘুরে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সূত্র: সিলেটভিউ২৪ডটনেট