- জুন ২৮, ২০২০
- জাতীয়
- 448
নিউজ ডেস্কঃ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন ভারতে বর্ষণ বেড়ে যাওয়া ফুলে-ফেঁপে উঠেছে বন্যাপ্রবণ নদ-নদীগুলো। প্রধান প্রধান সব নদীর পানিই বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে দেখা দিয়েছে বন্যা পরিস্থিতির।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বন্যা প্রতিদিন বিস্তৃত হচ্ছে। শনিবার নয়টি জেলা হলেও রোববার প্লাবিত হয়েছে ১১টি জেলার নিম্নাঞ্চল।
ব্রহ্মপুত্র, যমুনার পানির উচ্চতা দ্রুতগতিতে বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে। কেননা, কেবল এই নদ-নদীর পানির কারণে দেশে উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, সব প্রধান নদ-নদীর পানির উচ্চতা বাড়ছে, যা আগামী বুধবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে। সোমবার নাগাদ পদ্মানদীর গোয়ালন্দ পয়েন্টের পানিও বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে। বর্তমানে বিপৎসীমার উপরে থাকলেও এসময় স্থিতিশীল থাকতে পারে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি উচ্চতা। তবে কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিলেট, নেত্রকোনা ও সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে। অপরদিকে লালমনিরহাট ও নীলফামারী জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
বর্তমানে ধরলার পানি কুড়িগ্রামে বিপৎসীমার ৬৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, তিস্তার পানি ডারিয়ায় ১৫ সেমি উপর দিয়ে, ঘাঘটের পানি গাইবান্ধায় ৩৫ সেমি উপর দিয়ে, ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়ায় ৫৩ সেমি উপর দিয়ে, চিলমারীতে ৬৬ সেমি উপর দিয়ে, ফুলছড়িতে যমুনার পানি ৫৯ সেমি উপর দিয়ে, বাহাদুরাবাদে ৫২ সেমি, সারিয়াকান্দিতে ২৯ সেমি, কাজীপাড়ায় ৩০ সেমি ও সিরাজগঞ্জে ৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এছাড়া সুরমার পানি কানাইঘাটে বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে, কুশিয়ারার পানি সুনামগঞ্জে ৭০ সেমি উপর দিয়ে, যাদুকাটার পানি লরেরপাড়ে ৯০ সেমি উপর দিয়ে এবং সোমেশ্বরীর পানি কলমাকান্দায় ২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আসাম, সিকিম, মেঘালয়, দার্জিলিংয়ে এবার রেকর্ড পরিমাণ বর্ষণ হচ্ছে। চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৭২ মিলিমিটার বর্ষণ হয়েছে, যা এ মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
ভারতে এই বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বাড়ছে দেশের প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি। এটা আরো অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়া অফিস ও পাউবো স্বল্পমেয়াদি (৫ থেকে ১০ দিন) বন্যার যে আভাস দিয়েছিল, ভারতের বর্ষণ অব্যাহত থাকলে সেটা দীর্ঘমেয়াদী বন্যায় পরিণত হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় বিরাজ করছে। এ অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হতে পারে।
বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ বেড়েছে। তাই বৃষ্টি হলেও গরম অনুভূত হবে অনেক অঞ্চলে।