- জুলাই ২১, ২০২০
- শীর্ষ খবর
- 456
গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃসিলেটের গোয়াইনঘাটে ফের বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও টানা বর্ষণের ফলে চতুর্থ দফায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এ বন্যায় নিম্নাঞ্চলের পাশাপাশি প্লাবিত হয়েছে উপজেলা সদরও।
এবারের বন্যায় উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় এলাকাই প্লাবিত হয়েছে। গোয়াইনঘাটের পিয়াইন,সারী এবং গোয়াইনের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্লাবিত করেছে নতুন নতুন এলাকা।সোমবার রাত ১১টার পর থেকে ফের উজান থেকে নেমে আসা শুরু হলে পাহাড়ি ঢলের স্রোতে উপজেলার সবকটি এলাকার নিম্নাঞ্চল তলিয়ে যায়।
এমনিতে বিগত ২ মাস ধরে নিম্নাঞ্চলের এলাকাসমুহ কম-বেশি পানিতে আবদ্ধ ছিলো। সোমবার রাতের পাহাড়ি ঢলের পানির স্রোতের তীব্রতায় বাউরভাগ, নয়াগাঙ্গের পাড় গ্রামে পিয়াইন নদীর ভাঙ্গন আবারও মারাত্মক আকার ধারণ করে। এতে করে বাড়িঘর বাশঝাড়সহ নদীর তীরবর্তী বেশ কিছু জমি নতুন করে পিয়াইন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
বন্যায় আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জিসি৮ কিলোমিটার জাফলং সড়ক। সড়কে বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক ভাঙ্গন আর পানিতে নিমজ্জিত থাকায় যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। বন্ধ রয়েছে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট ও সারী-গোয়াইন সড়কও। গোয়াইনঘাটের বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবন্ধি মানুষের হাহাকার আর কষ্টের যেন শেষ নেই। নিজেদের পাশাপাশি গৃহপালিত গবাদিপশু নিয়ে ফের বিপাকে পড়েছেন শত শত পরিবারের মানুষজন।
স্থানীয় ও বিভিন্ন ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিদের সাথে আলাপকালে তাদের তথ্যমতে জানা যায় পাহাড়ি ঢলে পানি উঠেছে শত শত ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়ে পানি উঠেছে। বন্যার পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে বিভিন্ন স্থানে খুঁটি ভেঙ্গে পড়া, বৃদ্ধি পাওয়া বন্যার পানির সাথে বিদ্যুতের তারের সংস্পর্শ বিদ্যুৎ সরবরাহ ঝুকিপূর্ন হয়ে উঠায় দুর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রাখা হয়েছে বিদ্যুতের সরবরাহ।
এবারও পাহাড়ি ঢলের সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার কৃষিতে মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সুলতান আলী জানান, গোয়াইনঘাটের এবারের বন্যায় ৩ হাজার ৯ শত হেক্টর আউশ, বোনা আমন, সবজিতলা ও ৩০ হেক্টর বীজতলা সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত হয়ে গেছে। এবারও উপজেলার মৎস্য খামারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। বিগত বন্যার ন্যায় এবারও পানি ঢুকে পড়ায় ভেসে গেছে মৎস্য খামারে থাকা খামারিদের অবশিষ্ট মাছ। বানের সেই পানির সাথে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে অগণিত মৎস্য খামারির শেষ স্বপ্ন টুকুও।
এ ব্যাপারে কথা হলে গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুস সাকিব বলেন, দফায় দফায় পাহাড়িঢলে সৃষ্ট বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলো আবারও প্লাবিত হয়েছে। সারী ও পিয়াইনের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে উপজেলার নতুন নতুন এলাকা, ঘর বাড়ি প্লাবিত করেছে। উপজেলার বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ২০ স্কুল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে গোয়াইনঘাটের সড়ক যোগাযোগ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। বন্যার্তদের জন্য জরুরী ত্রাণ সহায়তা চাওয়া হয়েছে।