- জুলাই ২৬, ২০২০
- জাতীয়
- 536
নিউজ ডেস্কঃ ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম ঢাকাতে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। একইসঙ্গে প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
গত বছর এ দাম ছিল যথাক্রমে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা ও ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। সে হিসেবে দাম কমেছে ঢাকায় ১০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ৮ টাকা।
রোববার (২৬ জুলাই) পবিত্র ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ সংক্রান্ত জুম প্ল্যাটফর্ম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
সভায় কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ, ক্রয় বিক্রয়, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, মজুদ, চামড়ায় লবণ লাগানো ও মিডিয়ায় প্রচারের বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীনের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল সভায় অতিরিক্ত সচিব ওবায়দুল আজম, অতিরিক্ত সচিব শরিফা খানম, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহীন আহমেদ, চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির প্রেসিডেন্ট সাইফুল ইসলাম, বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আফতাব হোসেনসহ চামড়াখাত শিল্পের উদ্যোক্তা, ব্যবসায়ী, রফতানিকারক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, এ বছর ঢাকাতে গরুর লবণযুক্ত কাঁচা চামড়ার দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকা ও ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খাসির লবণযুক্ত চামড়ার দাম ১৩ থেকে ১৫ টাকা ও বরকির চামড়া ১০ থেকে ১২ টাকা ধরা হয়েছে। চামড়া নিয়ে যদি কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তাহলে প্রয়োজনে কাঁচা চামড়া রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, কাঁচা চামড়া পরিবহনে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয় এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
চামড়া রপ্তানির বিষয়ে টিপু মুনশি বলেন, এবারও যদি চামড়ার দামে সমস্যা দেখা যায় তাহলে কাঁচা চামড়া ও ওয়েট-ব্লু লেদার বা আংশিক প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হবে। এবার যেন কিছুটা দাম পাওয়া যায় সেজন্য কাঁচা চামড়া ও ওয়েট-ব্লু লেদার বা আংশিক প্রক্রিয়াজাত চামড়া রপ্তানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এখনই রপ্তানির ঘোষণা দেওয়া হয়নি। বরং চামড়া নিয়ে যদি গতবারের মতো সমস্যা হয় তাহলে রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হবে। এজন্য একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটিও গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি রপ্তানির বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।
চামড়ার দাম কমলেও চামড়াজত পণ্যের দাম কেন বাড়ে সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত বছর আমাদের চামড়া রপ্তানি কমে গেছে। বর্তমানে কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে সারা পৃথিবী স্থবির হয়ে আছে। আমরা সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে বর্তমানে বাজারে চামড়ার কী দাম সেটা নিয়ে ক্রেতা, বিক্রেতা, রপ্তানিকারক সবার সঙ্গে আলোচনা করে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। যা সবার জন্য সহনীয় হয়। পাশাপাশি আমরা বিকল্পপথও রেখেছি। যদি একান্তই দাম না পায় তাহলে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করবো। আমাদের চামড়ার বাজারের মূল লক্ষ্য চায়না। তারপর অন্য দেশ। তবে এ বছর সারা পৃথিবীতে রপ্তানি বাজার অনেক খানি কমে যাবে বলে ধারণা করছি।
চামড়া পাচারের কথা বলে পানির দামে চামড়া কেনার সুযোগ নেওয়া ও ট্যানারি মালিকরা আড়তদারদের পাওনা টাকা কেন দেয় না সে বিষয়ে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ট্যানারি মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বর্ডার দিয়ে চামড়া পাচার হওয়া আমরা সেটা কখনো চাই না।
গত বছর পশুর চামড়া নিয়ে বিশৃঙ্খলা হয়েছে এ বছর এ ধরনের কোনো পরিস্থতি তৈরি হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, আমরা আশাবাদি এ বছর চামড়া নিয়ে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না।
এদিকে আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কাঁচা চামড়া নির্ধারিত মূল্যে ক্রয়-বিক্রয়, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, মজুদ ও চামড়ায় প্রয়োজনীয় লবণ লাগানো তদারকির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি কমপ্রেহেন্সিভ মনিটরিং প্ল্যান গ্রহণ করেছে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় যৌথ সমন্বয় কমিটি, কেন্দ্রীয় সমন্বয় ও মনিটরিং কমিটি, কন্ট্রোলরুম, ঢাকা ও নাটোর জেলার জন্য বিশেষ মনিটরিং টিম, বিভাগীয় ও জেলার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়াধীন দপ্তর/সংস্থার সমন্বয়ে মনিটরিং টিম এবং সব জেলা পর্যায়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার সমন্বয়ে মনিটরিং টিম কাজ করবে।