• জুলাই ২৭, ২০২০
  • রাজনীতি
  • 651
করোনার মতো বন্যা মোকাবেলায়ও সরকার নিষ্ক্রিয়: ফখরুল

নিউজ ডেস্কঃ করোনার মতোই বন্যা মোকাবেলায়ও সরকার উদাসীন ও নিষ্ক্রিয় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

সোমবার দুপুরে উত্তরায় নিজের বাসা থেকে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় যেমন সরকার একেবারেই ব্যর্থ, চরম উদাসীনতা, অবহেলা ও দুর্নীতির কারণে গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। ঠিক তেমনি বন্যার বিষয়েও সরকারের নিরবতা, নিষ্ক্রিয়তা মানুষকে আতঙ্কগ্রস্ত করছে। অনির্বাচিত সরকারের এই অবহেলা উদাসীনতা এবং নিষ্ক্রিয়তার নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে বন্যায় প্রয়োজনীয় ত্রাণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহবানও জানান বিএনপির মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি সব সময় যেকোনো দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ায়। সর্বশেষ করোনা দুর্যোগে পাশে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। বন্যা দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়াতে স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুককে আহবায়ক করে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা অবিলম্বে কাজ শুরু করবে। কমিটির সদস্যরা হলেন- দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবদিন ফারুক, মনিরুল হক চৌধুরী, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, আবদুল হাই, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হারুন অর রশীদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, আসাদুল হাবিব দুলু, সাখাওয়াত হাসান জীবন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন, শ্যামা ওবায়েদ, সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, ত্রাণ ও পুর্নবাসনবিষয়ক সম্পাদক আমিনুর রশীদ ইয়াসিন, স্বেচ্ছাসেবাবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, কেন্দ্রীয় নেতা তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আমিরুল ইসলাম খান আলীম, আমিনুল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম মিলন, নেওয়াজ হালিমা আরলি, জেড খান মো. রিয়াজ উদ্দিন নসু, রফিকুল ইসলাম, তাসভীরুল ইসলাম, আব্দুল লতিফ জনি, জিএম সিরাজ, আমিনুল ইসলাম, এসএ জিন্নাহ কবির, মাইনুল হাসান সাদিক. জাকির হোসেন বাবলু ও রফিকুল ইসলাম পাপ্পু।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার বলেছে- বন্যার বিষয়ে তারা এতোটুকু চিন্তিত নয়। কিন্তু প্রতিদিন গণমাধ্যমে আসছে- বন্যার্ত মানুষের আহজারি ও তাদের অসহায়ত্ব কথা, সহায় সম্বল হারিয়ে সড়কের অথবা বাঁধের ওপরে আশ্রয় নেওয়া শিশু সন্তান, বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে নিয়ে খোলা আকাশের নিচে অভুক্ত থাকছেন মানুষ। অথচ এই বিষয়গুলো সরকারকে চিন্তিত করে না। কারণ তারা এখন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহিতা করতে হয় না। করোনা-বন্যা এসব দুর্যোগ এলে বরঞ্চ তারা খুশি হয় এই কারণে যে, দুর্নীতির নতুন সুযোগ সৃষ্টি হলো।

বাংলাদেশ বন্যার জন্য ভারতীয় বাঁধ খুলে দেওয়াকে দায়ী করে তিনি বলেন, ভারতের অভিন্ন নদীগুলোর সকল বাঁধ ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানি বাংলাদেশে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, মেঘনা, মহানন্দা, পদ্মা, তিস্তা ও ধরলা নদীর অবাহিকায় প্রায় ৩৪টি জেলা ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়ে গেছে। কয়েকটি জেলায় এক মাসের মধ্যে দুই-তিন বার বন্যার পানি উজান থেকে এসে ঘর-বাড়ি, ফসলের ক্ষেত ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। ভারতের সঙ্গে যে অভিন্ন নদী প্রায় ১৫৪টি, একমাত্র পদ্মার ফারাক্কা বাঁধ ব্যতীত কোনটারই কোনো পানি বন্টন চুক্তি ভারতের অনীহার কারণে সম্পন্ন হয়নি। তিস্তার চুক্তির কথা ফলাও করে এই সরকার প্রচার করলেও গত এক দশকে কোনো চুক্তি করতে সক্ষম হয়নি। এই সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে প্রায় প্রতি বছর বাংলাদেশের নদী অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষ এই বন্যায় আক্রান্ত হয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন প্রায় নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে।

বন্যা এলাকায় সরকার ত্রাণ দিচ্ছে, তারপরও কেন উদাসীনতার অভিযোগ করছেন- প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, বন্যার জন্য এখন পর্যন্ত কী পরিমান, কি দিয়েছে তা দেশবাসী জানেই না। এখন সকল শক্তিকে এক করে ত্রাণের ব্যবস্থা করতে হবে, খাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নাই।

ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে দলের গঠিত জাতীয় ত্রাণ কমিটির আহবায়ক ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুও যুক্ত ছিলেন।