• আগস্ট ১৪, ২০২০
  • জাতীয়
  • 512
সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন

নিউজ ডেস্কঃ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরু করেছেন র‌্যাবে কর্মরত সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।

এর আগে শুরুতে র‌্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার জামিল আহমদকে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছিল। তার স্থলে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে এসেছেন মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল আশিক বিল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গত ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানের বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌসের করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। নতুন তদন্ত কর্মকর্তা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম মেধা সম্পন্ন, দূরদর্শী ও বিচক্ষণ কর্মকর্তা। অতীতে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সুনাম ও সফলতার সঙ্গে পেশাদারিত্বের পরিচয় দিয়েছেন।

এদিকে সিনহা হত্যা মামলায় রিমান্ড মঞ্জুর হওয়া চার পুলিশ সদস্য কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়া এবং সন্দেহজনক তিন আাসামি টেকনাফের বাহারছরার মারিশবনিয়া এলাকার নাজিম উদ্দিন নাজুর ছেলে নুরুল আমিন, নজির আহমদের ছেলে নিজাম উদ্দিন ও জালাল আহমদের ছেলে মোহাম্মদ আয়াছকে র‌্যাবের নতুন তদন্ত কর্মকর্তা খায়রুল ইসলামের নেতৃত্বে শুক্রবার (১৪ আগস্ট) সকালে জেলা কারাগার থেকে রিমান্ডের জন্য হেফাজতে নেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ৮ ও ৯ আগস্ট কক্সবাজার কারা ফটকে চার আসামি কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন ও এএসআই লিটন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পান তৎকালীন তদন্ত কর্মকর্তা। ফলে তাদেরকে আরও ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়। ১২ আগস্ট শুনানি শেষে তাদের প্রত্যেকের সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালতের বিজ্ঞ বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না ফারাহ্।

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার আজিম আহমদ বলেন, কিছু সমস্যার কারণে সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে অন্যান্য আসামিদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজার কারাগারের জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন জানান, মেজর সিনহা হত্যা মামলায় কারাগারে থাকা পুলিশের চার সদস্য ও অপর একটি মামলার (সাক্ষী) তিনজনসহ মোট সাতজনকে কারাগার থেকে র‌্যাব হেয়াজতে নিয়ে যায়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের আগে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়।

উল্লেখ্য, গত ৩১ জুলাই রাত ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সাবেক সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এ ঘটনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৫ আগস্ট টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ দাশ ও দায়িত্বরত পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনকে আসামি করে সিনহার বোন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হত্যা মামলা করেন। এ মামলার পর ৯ পুলিশ সদস্যকেই বরখাস্ত করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছে কক্সবাজার র‌্যাব-১৫।

ওই মামলায় ওসি প্রদীপসহ তিনজনকে সাতদিনের রিমান্ড ও অন্য আসামিদের দুদিন করে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন আদালত। ওসি প্রদীপসহ সাত আসামি এখনও কারাগারে রয়েছে। একই ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় ৯ আগস্ট সিনহার সহযোগী শিপ্রা দেবনাথ ও ১০ আগস্ট সাহেদুল ইসলাম সিফাত জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পান।

তবে পুলিশের দায়ের করা মামলার তিন সাক্ষী মো. নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন ও মোহাম্মদ আয়াজ, পুলিশের চার সদস্য ও ওসি প্রদীপসহ মোট ১০ জন কারাগারে রয়েছে। কারা গেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা পুলিশের চার সদস্য ও সন্দেহজনক তিনজন আসামির সাতদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সেই আদেশেই শুক্রবার তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।