- আগস্ট ২৬, ২০২০
- জাতীয়
- 419
নিউজ ডেস্কঃ জ্যৈষ্ঠে আর্বিভাব; ভাদ্রে প্রস্থান। যাওয়া আর আসার এ পথচলার মধ্যে ঠাঁই করে নিয়েছেন মানুষের মনে চির বিদ্রোহী অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে।
বাংলাদেশে তিনি ভূষিত হয়েছেন জাতীয় কবির খেতাবে।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) তার ৪৫তম প্রয়াণ দিবস। অংকের হিসাবে তার জীবনকাল ৭৭ বছরের; তবে সৃষ্টিশীল ছিলেন মাত্র ২৩ বছর। নজরুলের এই ২৩ বছরের সাহিত্য জীবনের সৃষ্টিকর্ম বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ।
১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ অবিভক্ত বাংলার বর্ধমান জেলার চুরুলিয়ায় জন্ম নেওয়া চির বিদ্রোহী নজরুল শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ঢাকার পিজি হাসপাতালের (বর্তমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়) কেবিনে ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্রে।
তার ‘মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই’ গানের বাণীর আকাঙ্ক্ষা ভোলেনি বাংলাদেশ; সে আকাঙ্ক্ষাই পূরণ করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদ প্রাঙ্গণে তাকে সমাহিত করে।
ছোট গল্প, উপন্যাস, নাটক লিখলেও কাজী নজরুল মূলত কবি হিসেবেই বেশি পরিচিত। বাংলা কাব্যে নবধারা সঞ্চিত হয় তার থেকে। এটি হলো ইসলামী সংগীত তথা গজল। নজরুল প্রায় তিন হাজার গান রচনা এবং সুর করেছেন; যা নজরুল সংগীত বা নজরুলগীতি নামে পরিচিত।
‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেবনা ভুলিতে
আমি বাতাস হইয়া জড়াইব কেশ, বেনী যাবে যবে খুলিতে।
তবু আমারে দেবনা ভুলিতে। ’, তার অসংখ্য নজরুলগীতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি।
মধ্যবয়সে তিনি পিকস ডিজিজে আক্রান্ত হন। এর ফলে আমৃত্যু তাকে সাহিত্যকর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। একসময় তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
১৯৭২ সালের ২৪ মে ভারত সরকারের অনুমতিক্রমে কবি নজরুলকে সপরিবারে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হয়। এ সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান তাকে জাতীয় কবির স্বীকৃতি দেন। ১৯৭৬ সালে কবিকে দেওয়া হয় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। একই বছর তাকে ‘একুশে পদক’-এ ভূষিত করা হয়।
কাজী নজরুলের রচিত ‘চল চল চল’ বাংলাদেশের রণসংগীত। তার কিছু গান জীবদ্দশায় গ্রন্থাকারে সংকলিত হয়েছিল। যার মধ্যে রয়েছে- গীতি শতদল, গানের মালা, গুল বাগিচা, বুলবুল ইত্যাদি। পরবর্তীকালে আরও গান গ্রন্থিত হয়েছে। তবে তিনি প্রায়শই তাৎক্ষণিকভাবে গান লিখতেন। সেসব গান প্রয়োজনীয় সংরক্ষণের অভাবে হারিয়ে গেছে বলে অনুমান করা হয়। এছাড়া, কাজী নজরুল গান রচনাকালে ১৯টি রাগের সৃষ্টি করেন।
বর্তমানে করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে উন্মুক্তস্থানে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন হচ্ছে না। তবে বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি, নজরুল ইনস্টিটিউট, সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদসহ বেশ কিছু সংগঠন ভার্চ্যুয়ালি নজরুলজয়ন্তী উদযাপন করবে।