- সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২০
- জাতীয়
- 383
নিউজ ডেস্কঃ বৃষ্টি আর বন্যা দুটি একযোগে দেশের উত্তরাঞ্চলে আবারও আঘাত করেছে। শনিবারের মধ্যে সিলেট বিভাগের বেশ কয়েকটি স্থানে বন্যার ঢল আসতে পারে। বাংলাদেশের উজানে ও দেশের ভেতরে তিনটি বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি শুরু হতে পারে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।
এসব তথ্য ও পূর্বাভাস জানিয়ে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, এই বন্যা বেশি দিন স্থায়ী হবে না। আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে ধরলা, তিস্তা ও সিলেট অঞ্চলের নিম্নাঞ্চল থেকে বন্যার পানি নেমে যেতে পারে।
গত সপ্তাহে উত্তরাঞ্চলের ধরলা নদীর পানি বেড়ে কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। তারপর তিস্তা, ব্রহ্মপুত্রের পানিও বাড়তে শুরু করেছে। এই পানি নামবে মেঘনা ও পদ্মা হয়ে। ফলে সপ্তাহের শেষের দিকে ওই দুই নদী অববাহিকার পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এতে মূলত পদ্মার দুই পাড়ে ভাঙন বাড়তে পারে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, হঠাৎ করে উজানে এবং বাংলাদেশের ভেতরে বৃষ্টি বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে উত্তরাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটি খুবই স্বল্পস্থায়ী হবে, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে পানি নেমে যাবে।
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে আগামী দুই-তিন দিনের জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, শনিবার থেকে রংপুর-রাজশাহী ও সিলেট বিভাগে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগেও বৃষ্টি হবে। সেই সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়ে যেতে পারে। আকাশ মেঘলা থাকায় দিন ও রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে। ফলে হালকা শীত শীত অনুভূত হতে পারে।
এদিকে আজ শুক্রবার দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় ১৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া কুড়িগ্রাম ও নীলফামারীতে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
এই হঠাৎ বৃষ্টি ও বন্যায় আমনের আরেক দফা ক্ষতি হতে পারে। বিশেষ করে উত্তর থেকে মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের শেষ সপ্তাহ চলা বন্যার কারণে আমনের বীজতলার প্রায় পুরোটাই ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে এসব জেলার কৃষকেরা বোনা আমনের চাষ শুরু করেন। কিন্তু কুড়িগ্রামসহ উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলার নিম্নাঞ্চলে আবারও বন্যার পানি চলে এসেছে। ফলে এসব এলাকার আমন ফসল আবারও ক্ষতির মুখে পড়েছে।
এ ব্যাপারে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক আইনুন নিশাত বলেন, টানা কয়েক দফা বন্যায় কৃষকের ফসলের যে ক্ষতি হয়ে গেছে তার পরিমাণ দ্রুত নির্ধারণ করতে হবে। কৃষকদের কৃষি উপকরণ ও অর্থ দিয়ে সহায়তা পৌঁছে দিতে হবে। নয়তো এ বছরের খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, আজ শনিবার থেকে আগামী সোমবার পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপটি ভারতের বিহারে স্থল লঘুচাপে পরিণত হয়েছে। ফলে এর প্রভাবে বিপুল পরিমাণে মেঘমালা তৈরি হয়েছে। এতেই মূলত এই বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
আবহাওয়া দপ্তরের আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ বলেন, এবারের মৌসুমি বায়ুটি বেশ শক্তিশালী হিসেবে আছে। এটি দু-একবার দুর্বল হলেও কিছুদিনের মধ্যেই আবার শক্তিশালী হয়ে বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। এর প্রভাবে তাই এখনো বৃষ্টি হচ্ছে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে সেটি বিদায় নিলে আস্তে আস্তে ঠান্ডা বাড়বে, শীত পড়বে।