• ডিসেম্বর ১৩, ২০২০
  • জাতীয়
  • 363
সিনহা হত্যা : পরিকল্পনায় ওসি প্রদীপ, জড়িত তিন সোর্স

নিউজ ডেস্কঃ কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ অস্ত্র ও নির্যাতনের সম্রাজ‌্য গড়ে তুলেছিলেন। তার ইয়াবা বাণিজ‌্যের কথা জেনে যাওয়ায় অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে পরিকল্পতভাবে হত‌্যা করা হয় বলে র‌্যাব জানিয়েছে।

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে কক্সবাজার আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় র‌্যাব। পরে ঢাকার কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ। তিনি তদন্তের বিস্তারিত জানান।

তিনি বলেন, ‘সিনহা হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ওসি প্রদীপ। তার সঙ্গে এই পরিকল্পনায় পুলিশের তিনজন সোর্স জড়িত। তারা হলেন- নুরুল আমিন, নিজাম উদ্দিন ও আয়াজ ওরফে আয়াজ।’

সংবাদ সম্মেলনে আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ঘটনার নাটকীয়তা তৈরি করেন ওসি প্রদীপ। ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত। লিয়াকতসহ বাকি আসামিদের নিয়ে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজান ওসি প্রদীপ।’

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘মূলত দুটো কারণে ওসি প্রদীপ সিনহাকে হত্যা করে। সেটা হলো- তার ইয়াবা বাণিজ্য ও সেটা জেনে ফেলায়। যদি ইউটিউব চ্যানেলে এসব প্রচার হয়, তা হলে সবাই জেনে যাবে। এসব কারণেই সিনহাকে হত্যার ন্যাক্কারজনক ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় প্রদীপ।’

তিনি বলেন, ‘সে সরকারি অস্ত্র ব‌্যবহার করে অনৈতিক কাজ করেছে এবং কক্সবাজারে ইয়াবার সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। সে বেপরোয়াভাবে যা ইচ্ছে তাই করতো। ওসি প্রদীপের অভয়ারণ্য ছিল কক্সবাজার এলাকা।’

সাড়ে চার মাসেরও বেশি সময় ধরে তদন্তের পর অভিযোগপত্র দাখিল করা সংস্থাটি জানিয়েছে, মেজর সিনহা ভ্রমণ বিষয়ে ভিডিও তৈরির জন্য কক্সবাজার গেলেও সেখানে গিয়ে মাদক পাচার বিষয়ে কাজ করেন। আর তখন এর সঙ্গে ওসি প্রদীপের সম্পৃক্ততার তথ্য পান।

আশিক বিল্লাহ বলেন, ‘ইয়াবা ব্যবসা বিষয়ে মেজর সিনহা ওসি প্রদীপের বক্তব্য নিতে চাইলে তিনি আগে সিনহাকে হুমকি দেন ও পরে হত্যা করেন। টেকনাফে ভ্রমণবিষয়ক তথ্যচিত্র নির্মাণকালে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে ইয়াবা কারবারে প্রদীপের সংশ্লিষ্টতার তথ্য পান সিনহা। পাশাপাশি প্রদীপের বহুমুখী নির্যাতনের তথ্যও পান তিনি। এ নিয়ে টেকনাফ থানাতেই সিনহাকে হুমকি দেন ওসি প্রদীপ।’

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ‌্যম বিভাগের পরিচালক বলেন, ‘মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় ১৫ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দিয়েছেন র‌্যাবের তদন্ত কর্মকর্তা। তদন্তে বেরিয়ে এসেছে, ওসি প্রদীপের নির্দেশেই পরিদর্শক লিয়াকত পাঁচ সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে সিনহাকে হত্যা করেছে। মেজর সিনহাকে হত্যার পর বাহারছড়া ক্যাম্পের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ বাকি আসামিদের নিয়ে মাদক উদ্ধারের নাটক সাজান ওসি প্রদীপ।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডে ১৫ জন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। তাদের মধ্যে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কনস্টেবল সাগর দেবনাথ এখনো পলাতক। তাদের যেন সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়, চার্জশিটে সে সুপারিশ করা হয়েছে।’