- জানুয়ারি ৩১, ২০২১
- জাতীয়
- 275
নিউজ ডেস্কঃ করোনাভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ মিনারে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সশরীরে এসে শ্রদ্ধা জানানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। ইতোমধ্যে গত ১৮ জানুয়ারি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় শহীদ দিবস উদযাপনের খসড়া কর্মসূচি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই খসড়া কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে জন্য পাঠানোও হয়েছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (অনুষ্ঠান) অসীম কুমার দে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মর্যাদা সমুন্নত রাখতে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের ক্ষেত্রে সব প্রতিষ্ঠান, সংগঠন, ব্যক্তি ও জনসাধারণ যাতে শৃঙ্খলা বজায় রাখে এবং বর্তমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রতিটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ জন প্রতিনিধি এবং ব্যক্তি পর্যায়ে একসঙ্গে সর্বোচ্চ দুই জনের বেশি যেন শহীদ মিনারে না যান সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়। সংশ্লিষ্ট সবাই এই বিষয়ে একমত পোষণ করেছে।’
যুগ্মসচিব বলেন, ‘আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় নেয়ার খসড়া কর্মসূচি অনুমোদনের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে।’
একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপনের খসড়া কর্মসূচিতে বলা হয়েছে, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের ক্ষেত্রে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে হবে। শহীদ মিনারের সব প্রবেশমুখে হাত ধোয়ার জন্য বেসিন ও লিকুইড সাবান রাখতে হবে। মাস্ক পড়া ছাড়া কাউকে শহীদ মিনার চত্বরে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। শহীদ মিনার চত্বরে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক স্কাউট/গার্লস গাইড/স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে। তাদের কাছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও মাস্ক সরবরাহ করতে হবে; যাতে শহীদ মিনারে আসা জনসাধারণ হ্যান্ড স্যানিটাইজ করে শহীদ মিনারে প্রবেশ করতে পারেন।
কেউ মাস্ক না নিয়ে আসলে তাদেরকে মাস্ক সরবরাহ করার ব্যবস্থা থাকবে। একুশে ফেব্রুয়ারি রাতে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ব্যবস্থা করা, যাতে রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ঐতিহ্য বজায় রেখে শহীদ মিনারে উপস্থিত হতে পারেন। রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কখন শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন, সেই বিষয়ে রাষ্ট্রপতির কার্যালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং এসএসএফ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে খসড়া কর্মসূচিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর বিভিন্ন ভিআইপি ব্যক্তিরা, ঢাকার বিদেশি দূতাবাসের প্রতিনিধিরা, একুশে উদযাপন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দফতর/সংস্থার প্রতিনিধিদের ও রাজনৈতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের ধারাক্রম নির্ধারণ করে এবং মিশন প্রধানদের তালিকা প্রণয়ন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সরবরাহ করতে হবে।
রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর নির্ধারিত ধারাক্রম অনুযায়ী বিভিন্ন ভিভিআইপি, ভিআইপি ব্যক্তিদের শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত অতিরিক্ত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও ৩০ মিনিট নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন বলে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত সোমবার প্রথম সশরীরে মন্ত্রিসভা বৈঠক করেছেন। আগামী ১৮ মার্চও প্রধানমন্ত্রী সশরীরে একুশের বই মেলা উদ্বোধন করবেন। তাই আমরা আশা করছি, প্রধানমন্ত্রী একুশে ফেব্রুয়ারি সশরীরে শহীদ মিনারে এসে শ্রদ্ধা জানাবেন। চাইলে প্রধানমন্ত্রী তার প্রতিনিধিও পাঠাতে পারেন। তবে যেটাই হোক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাদের জানিয়ে দেয়া হবে।’
একুশে উদযাপন উপলক্ষে গত ২৪ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক সভা হয়। সেখানে খসড়া কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়।
অমর একুশে উদযাপনের কর্মসূচি সুষ্ঠু বাস্তবায়নের জন্য সভা থেকে আইন অনুষদের ডিন ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. রহমত উল্লাহকে সমন্বয়কারী, সাধারণ সম্পাদক মো. নিজামুল হক ভূঁইয়া ও সহসভাপতি সাবিতা রিজওয়ানা রহমানকে যুগ্ম সমন্বয়কারী এবং প্রক্টরকে সদস্যসচিব করে অমর একুশে উদযাপন কেন্দ্রীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। একুশের উদযাপন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উপকমিটিও গঠন করা হয়।