- মার্চ ১৪, ২০২১
- লিড নিউস
- 450
 
			          নিউজ ডেস্কঃ গত দুই-তিন মাস থেকে সিলেটের করোনাভাইরাসের আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকলেও, মার্চের শুরু থেকে আবারও বাড়তে শুরু করেছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এরই মধ্যে সিলেটের করোনা আইসোলেশন সেন্টার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ৪১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে ১১ জনকে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ( আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এদিকে টিকা নেওয়ার পরও স্বাস্থ্যবিধি না মানা হয় তাহলে সংক্রমণের হারের সাথে সাথে বিপদও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এখন থেকে যদি সচেতনতা বাড়ানো না যায়, তবে ফের করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে। কাজেই মানুষকে মাস্ক পরতে হবে, ঘনঘন হাত ধুতে হবে এবং সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে চলতে হবে। নাহলে সামনে বড় বিপদ অপেক্ষা করছে বলে সাবধান করেছেন তারা।
সবশেষ আজ রোববার (১৪ মার্চ) বেলা ১টা পর্যন্ত সিলেট শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে ৪১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। যাদের মধ্যে ২০ করোনা পজিটিভ রোগী। এদের ১১ জনকে হাসপাতালটির নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ( আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বাকি ২১ জন রোগী করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।
এমতাবস্থায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার সংক্রমণরোধে সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি প্রয়োজনীয় বিভিন্ন স্বাস্থ্যবিধি। ঘরের বাইরে বের হলে মুখে মাস্ক পরিধান করা, স্যানিটাইজার ব্যবহার, সাবান অথবা ছাই দিয়ে হাত ধোয়া, শারীরিক দূরত্ব মেনে চলা, জনসমাগমস্থলে না যাওয়া এই ব্যাপারগুলো মেনে চলে। তবে বর্তমানে মানুষের মধ্যে এ ব্যাপারে ব্যাপক উদাসীনতা লক্ষ্য করা গেছে। যা করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এছাড়া সম্প্রতি করোনার হার কমে যাওয়া ও টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ায় মানুষ মনে করছে করোনা চলে গেছে। কিন্তু এটা তাদের ভুল ধারণা। করোনার প্রথম ঢেউ চলাকালীন যেভাবে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ অন্যান্য সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে, আবার সেই সতর্কতা অবলম্বন না করলে সংক্রমণের হার বহুগুণ বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
এ ব্যাপারে সিলেটে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের ডেপুটি আরএমও ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, বর্তমানে সিলেটের করোনা আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। যা সামলাতেও কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের। তবে আশারবাণী হচ্ছে রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করলেও বর্তমানে মৃত্যু হার অনেক কম। গত ১০ দিনে সিলেটে কোনো রোগী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি।
এদিকে সিলেটে করোনার সংক্রমণ বাড়ার পেছনে মানুষের উদাসীনতাকেই মূল কারণ হিসেবে দেখছেন এই চিকিৎসক। তিনি মনে করেন করোনার সংক্রমণরোধে পূর্বের ন্যায় স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই। তিনি বলেন, মানুষ দেশে করোনা শুরুর প্রথম দিকে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনেছে, বর্তমানে সেটা মানছেন না। বর্তমানে মানুষে বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে বেড়াতে যাচ্ছেন, বিয়েসহ বেশকিছু সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান করছেন; কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। যা করোনাকালীন মোটেও কাম্য নয়। তাই করোনা নিয়ন্ত্রণে সকলকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি বিশেষ করে মাস্ক বাধ্যতামূলকভাবে ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ ব্যাপারে সিলেট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আনিসুর রহমান বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সিলেটের সর্বত্র মানুষের মধ্যে চরম উদাসীনতার কারণে ফের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, এটা উদ্বেগজনক। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, সংক্রমণ একটু কমেছে বলে সবাই স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছি, যা মোটেই কাম্য নয়। বিশেষ করে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ব্যাপক জনসমাগমে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলায় চরম ঝুঁকি তৈরি করছে। এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সচেতনতা জরুরি। পাশাপাশি এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলেও তিনি মনে করেন।

 
             
				       
				       
				      