- মার্চ ১৫, ২০২১
- শীর্ষ খবর
- 290
নিউজ ডেস্কঃ লম্বা আকৃতির নৌকা। পাথর কোয়ারি এলাকায় এই নৌকার নাম ‘বারকি’। নৌকার মধ্যে যন্ত্র বাঁধা। তীরের সঙ্গে পাইপ–সংযোগ রেখে নৌকায় করে ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে তোলা হচ্ছিল পাথর। বন্ধ পাথর কোয়ারিতে নিষিদ্ধ যন্ত্র দিয়ে এভাবে অবৈধভাবে পাথর তোলার বিরুদ্ধে টাস্কফোর্সের অভিযানে ৫২টি যন্ত্র জব্দ করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। যন্ত্রের সঙ্গে দুই হাজার ফুট পাইপও ধ্বংস করা হয়। এসব যন্ত্র পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে এক ব্যবসায়ীকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি অববাহিকা এলাকায় ধলাই নদে এ অভিযান চালানো হয়। কোম্পানীগঞ্জের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরশাদ মিয়ার নেতৃত্বে এ অভিযান চালানো হয়। একটানা আড়াই ঘণ্টার অভিযানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য ও কোম্পানীগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্য অংশ নেন।
ধলাই নদে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে টাস্কফোর্সের একটি অভিযান হয়েছিল। বালু তোলার নামে চিপ পাথর তোলায় ১০ জনকে আটক করে ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছিলেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ভোলাগঞ্জ সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারি। নিষিদ্ধ যন্ত্র দিয়ে পাথর উত্তোলন করায় পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় পাথর কোয়ারির ইজারা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এ জন্য গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির পাথর উত্তোলন বন্ধ রেখেছে স্থানীয় প্রশাসন। পাথর কোয়ারির ধলাই নদের একাংশে দুটি বালুমহালের মধ্যে একটির ইজারা কার্যক্রম চালু রয়েছে। বালু তোলার নাম করে একশ্রেণির পাথর কারবারিরা নানা কৌশলে পাথর তুলছেন। সর্বশেষ চিপ (ছোট বা গুঁড়া) পাথর তোলার বিরুদ্ধে অভিযানের পর সোমবার নৌকায় যন্ত্র স্থাপন করে পাথর তোলার সময় এ অভিযান চালানো হয়।
ধলাই সিলেটের অন্যতম সীমান্ত নদ। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জির পাদদেশ থেকে ধলাই নেমে এসেছে বাংলাদেশে। বর্ষাকালে এ নদ দিয়ে পাহাড়ি ঢল নামলে বালু-পাথরের স্তর জমা হয়। শূন্যরেখার কাছে বিস্তৃর্ণ এলাকায়জুড়ে পাথর জমা হওয়ায় স্থানটি ‘সাদা পাথর’ নামে পরিচিতি। ২০১৭ সাল থেকে সাদা পাথর পর্যটকদের কাছে বিশেষ একটি আকর্ষণীয় স্থানে রূপ নিয়েছে।
ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির অববাহিকা এলাকা ধলাই নদ দিয়ে যত্রতত্র পাথর উত্তোলন করলে পর্যটনকেন্দ্র সাদা পাথর এলাকাও ঝুঁকির মুখে পড়বে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও সুমন আচার্য। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বন্ধ পাথর কোয়ারির পাশে বালুমহাল হওয়ায় পাথর কারবারিদের একটি চক্র নানা কৌশলে পাথর উত্তোলনের চেষ্টা করে। বালু থেকে সেঁচে চিপ পাথর তোলা বন্ধে এর আগে আরও তিনটি অভিযান চালানো হয়েছিল। সেই অভিযানের ধারবাহিকতায় এ অভিযান হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত টাস্কফোর্সের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।