- জুন ১৪, ২০২১
- মৌলভীবাজার
- 466
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ন্যাশনাল টি কোম্পানীর পাত্রখোলা চা বাগানে দখলদারিত্ব নিয়ে চা শ্রমিক দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষে দুই শ্রমিক আহত।
চা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রেখে একটি অংশ চা বাগান কারখানার সামনে দেশীয় অস্ত্র তীর-ধনুক দা লাঠি নিয়ে অবস্থানে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাগানে পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে।
সোমবার (১৪ জুন) সকাল ৮ টায় পাত্রখোলা চা বাগান কারখানার সামনে এ সংঘর্ষ ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পাত্রখোলা চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি গ্রুপে মধ্যে দখলদারিত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সভাপতি শিপন চক্রবর্তী ও সম্পাদক দুলাল অলমিকের গ্রুপের মধ্যে দ্বন্ধ রয়েছে। ম্যানেজমেন্ট সম্পাদক গ্রুপের সাথে সকল সুযোগ সুবিধা ও কার্যক্রম পরিচালনা করায় সভাপতি গ্রুপ ক্ষুব্ধ রয়েছে। এর জের ধরেই দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এতে সভাপতি গ্রুপের নয়ন কুর্মী (৩৫) ও সম্পাদক গ্রুপের লক্ষীন ধর ভৌমিক (২৮) আহত হন। আহতরা স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন।
ক্ষুব্দ শ্রমিকদের একটি পক্ষ কারখানার গেইটের ভেতরে থাকা পাগলা ঘন্টা পিটিয়ে শ্রমিকদের একত্রিত করছে। উত্তেজিত শ্রমিকরা চা বাগানের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেনা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে সহকারি পুলিশ সুপার (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সার্কেল)-এর নেতৃত্বে চার গাড়ি পুলিশ অবস্থান করছে। দুপুরে ঘটনাস্থলে র্যাব মোতায়েন করা হয়। তবে এ ঘটনার পর থেকে বিক্ষোভকারীদের একটি পক্ষ চা বাগানের সমস্যাকে দায়ী করছেন।
চা শ্রমিক শংকর কৈরী, ফুলকুমারী চাষা, অলকা গঞ্জু, পহেলা গীতা, গোলশান বিবি, রাধেশ্যাম গড় অভিযোগ করে বলেন, চা সেকশনে বজ্র্রপাতের সময় নিরাপত্তার কোন ব্যবস্থা নেই, ম্যানেজমেন্টের অনুগত লোকজন সকল সুযোগ সুবিদা ভোগ করলেও সাধারণ শ্রমিকরা তা থেকে বঞ্চিত।
পাত্রখোলা চা বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি শিপন চক্রবর্তী বলেন, ২০১৯ সাল থেকে এ চা বাগানের বেশ কিছু শ্রমিকের বসত ঘর ঝরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির সময় ঘরের ভেতর বৃষ্টির পানি পড়ে। চা বাগান কর্তৃপক্ষকে ঘর মেরামতের দাবি জানিয়ে আসলেও দেখা গেছে একটি পক্ষের চা শ্রমিকদের ঘর মেরামত করা হলেও প্রকৃত ঝরাজীর্ণ ঘর মেরামত ও সু-চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে না।
অপরদিকে পঞ্চায়েত সম্পাদক দুলাল অলমিক জানান, আসলে সভাপতি শিপন চক্রবর্তী বহিস্কৃত থাকায় বাগানে দায়দায়িত্ব থেকে বঞ্চিত। সে কারণেই তিনি গ্রুপ সৃষ্টির মাধ্যমে অস্থিরতা করছেন।
ঘটনার খবর পেয়ে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (কমলগঞ্জ- শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহিদুল ইসলাম মুন্সী, থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়।
তবে ন্যাশনাল টি কোম্পানী (এনটিসি) এজিএম কাম পাত্রখোলা চা বাগান ব্যবস্থাপক শামছুল ইসলাম সেলিম বলেন, আসলে বাগান ব্যবস্থাপনার কোন সমস্যা নয়। চা বাগান পঞ্চায়েতের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দুটি গ্রুপের মাঝে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। এ বিরোধেই পাত্রখোলা চা বাগানে এ অবস্থার সৃষ্টি।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়ারদৌস হাসান বলেন, পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতিও শান্ত রয়েছে। সমস্যার সমাধান হবে।