- জুন ২৪, ২০২১
- শীর্ষ খবর
- 317
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ছেলে মাদকাসক্ত। তার যন্ত্রনায় অতীষ্ট পুরো পরিবার। তাই ভাড়াটে লোক দিয়ে ছেলেকে খুন করান বাবা। এরপর নিজেই বাদী হয়ে ছেলে হত্যার দায়ে থানায় মামলা করেন।
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বড়দল ইউনিয়নের জাহাঙ্গির আলম হত্যার তদন্তে নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ।
গত ২১ মে গভীর রাতে উত্তর বড়দল ইউনিয়নের একটি হাওর থেকে মোহাম্মদ আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলমের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের এক প্রেস নোটে এ হত্যা রহস্য উদঘাটনের তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বিপিএম।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় নিহত জাহাঙ্গীর আলমের পিতা মোহাম্মদ আলী বাদী হয়ে একই এলাকার আহসান হাবিব( ২২), মো. সোলাইমান (২২) ও তৌফিকুল ইসলাম ভূইয়া( ২৮) নামে তিন ব্যক্তির নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে ও জিজ্ঞাসাবাদ করলে সন্দেহ আরও বাড়তে তাকে। তাহিরপুর থানা পুলিশ গোপনে ঘটনার তদন্ত করতে শুরু করে। কেচোঁ খুড়তে সাপ বের হয়ে আসে। বিভিন্ন তথ্য ও প্রমাণের উপর ভিত্তি করে একই এলাকার সুরুজ মিয়া( ৫৫) কে আটক করে এবং তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করলে সুরুজ মিয়া স্বীকার করেন তিনি এবং সেকানদার আলী (৫৫) মিলে জাহাঙ্গীর আলম কে খুন করার লোমহর্ষক কাহিনী।
পুলিশ সুপার আরও জানান, সুরুজ মিয়া জিজ্ঞাসাবাদে জানায় মোহাম্মদ আলীর পুত্র জাহাঙ্গীর আলম মাদকাসক্ত ছিল। তার অত্যাচারের কারণে তার পরিবারের নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিল। কোন উপায় না দেখে মোহাম্মদ আলী সুরুজ মিয়া ও সেকানদার আলীর শরণাপন্ন হয়ে তাদের ২০ হাজার টাকা দিয়ে তার ছেলেকে কে খুন করতে বলে।
কথামতো সুরুজ মিয়া ২১ মে রাতে জাহাঙ্গীর আলমকে মোবাইল ফোনে ৫শ টাকা দেয়ার কথা বলে মাহারাম নদীর তীরে নিয়ে গিয়ে পেশাদার খুনী সেকানদার ও সে মিলে নৃশংসভাবে খুন করে। পরে আবার মোবাইল ফোনে জাহাঙ্গীর আলমের পিতাকে খুনের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সেকানদার আলীকে পুলিশ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর এলাকা থেকে আটক করে। আটককৃত দুই ব্যক্তিই স্বীকার করে তারা খুন করেছে। দুজনেই আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে খুনের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক খুনের ঘটনায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, জাহাঙ্গীর আলমের পিতা হত্যা মামলার বাদী মোহাম্মদ আলী খুনের ঘটনায় জড়িত বিধায় তার বিরুদ্ধেই খুনের মামলা রুজু করা হচ্ছে এবং মোহাম্মদ আলীর দায়ের করা মামলার অভিযুক্তদের অব্যাহতি দেওয়ার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।