- জুলাই ৩০, ২০২১
- শীর্ষ খবর
- 304
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সরকারি নির্ধারিত দামের চেয়ে হাটবাজারগুলোয় ধানের দাম বেশি হওয়ায় সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলায় সরকারি ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম থমকে আছে। এ উপজেলার দুটি খাদ্যগুদামে ৪ হাজার ৩১ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত পৌনে তিন মাসে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ১ হাজার ৬৯৩ টন। ফলে নির্ধারিত সময়ে কোনো অবস্থায়ই খাদ্যগুদাম দুটিতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার মধ্যনগর ও ধরমপাশা বাজারে দুটি সরকারি খাদ্যগুদাম রয়েছে। মধ্যনগর খাদ্যগুদামে ২ হাজার ১০৯ টন ও ধরমপাশা খাদ্যগুদামে ১ হাজার ৯২২ টন ধান বরাদ্দ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি ধান ২৭ টাকা দরে ও প্রতি মণ ধান ১০৮০ টাকা দরে কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করার জন্য সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। প্রত্যেক কৃষক সর্বোচ্চ তিন টন ধান গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। চলতি বছরের ৬ মে থেকে এ উপজেলার দুটি সরকারি খাদ্যগুদামে ন্যায্যমূল্যে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। ধান সংগ্রহের সময় রয়েছে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
ধরমপাশা খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে গত ১৯ জুলাই পর্যন্ত এবং মধ্যনগর খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহ করা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত। হাটবাজারে ধানের দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকেরা গুদামে ধান নিয়ে আসছেন না। এ পর্যন্ত ধরমপাশা খাদ্যগুদামে ৬৯১ টন ও মধ্যনগর খাদ্যগুদামে ১ হাজার ২ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।
মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, ‘গুদামে ধান নিয়ে বিক্রি করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ধানের আর্দ্রতা পরীক্ষা করে সরকারি নির্দেশনামতো হলে তারপর ধান কিনে থাকেন। এ ছাড়া আরও নানা দিক সামলাতে হয়। আর বাজারে নিয়ে ধান বিক্রি করলে কোনোরকম ঝামলা ছাড়াই সরকারি দামের চেয়ে বেশি দামে ধান বিক্রি করা যাচ্ছে। কৃষকদের স্বার্থের কথা ভেবে সরকারিভাবে ধানের দাম আরও বাড়ানো উচিত বলে আমি মনে করি।’
উপজেলার মধ্যনগর বাজার ধান চাল আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জহিরুল হক বলেন, করোনার কারণে ধানের বাজারদর এখন ঊর্ধ্বগতির। ধানের দাম আরও বাড়বে মনে করে অনেকেই ধান কিনে মজুত করছেন। এ কারণে যতই দিন যাচ্ছে, হু হু করে বাড়ছে ধানের দাম। বর্তমানে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ১৮০ টাকা থেকে ১ হাজার ১৯৫ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
ধরমপাশা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) নৃপেন্দ্র কুমার নাথ ও মধ্যনগর খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি অবিনাশ দাস বলেন, উপজেলার হাটবাজারগুলোয় ধানের দাম সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি থাকায় ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। এই বাজারদর অব্যাহত থাকলে খাদ্যগুদাম দুটিতে সরকারিভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কোনো অবস্থায়ই সম্ভব নয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা সংগ্রহ পর্যবেক্ষণ কমিটির সভাপতি মো. মুনতাসির হাসান বলেন, সরকারি নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে হাটবাজারগুলোয় কৃষকেরা ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পারছেন। ফলে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। হাটবাজারে ধানের দাম অব্যাহত থাকলে এবার ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে মনে হচ্ছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সব রকম চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।