• অক্টোবর ২৭, ২০২১
  • মৌলভীবাজার
  • 354
চায়ের দেশে শীতের বার্তা

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ আবহমান বাংলায় প্রতিটি ঋতু বৈচিত্র্যময়। ঋতুচক্রে সর্বপ্রথম শীতের অনুভূতি নিয়ে আসে হেমন্ত।

মৃদু একটা অনুভূতি, শীতের তীব্রতা নেই, অথচ রয়েছে হিম হিম হাওয়া। এই ভালোলাগাটুকু অতুলনীয়। যার স্পর্শ পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠে হৃদয়। প্রকৃতিপ্রেমীরা এমন প্রকৃতির মাঝেই নিজেকে মেলে ধরতে চান বারবার।

চায়ের দেশে হেমন্তের রূপ যেন আরও মোহনীয়। স্নিগ্ধতা, প্রশান্তি আর চোখজুড়ানো সৌন্দর্য ছড়িয়ে দেয় প্রকৃতিতে। তবে সেই প্রকৃতি যদি চা শিল্পাঞ্চলময় হয়, তবে প্রাপ্তির খাতায় যোগ হয় বাড়তি কিছু। বিস্তৃত চা বাগানের ঘনসবুজ চা পাতায় মিশে যায় হেমন্তের মৃদু শীত।

সন্ধ্যা থেকেই শুরু হয়ে যায় সেই অধিবাস। পূর্ণ হয়ে উঠে রাত্রিঘেরা কালো প্রকৃতি। চলে সারা রাত হিম হয়ে উঠার কর্মযজ্ঞ। পরের দিন ভোর কিংবা সকালে চা পাতার গায়ে কুয়াশার উপস্থিতি হয়ে দেখা দেয় হেমন্তের জলজকণা। ছোট-বড় চা পাতার মাঝে বিন্দু বিন্দু শিশির বরাবরই সুন্দর দৃশ্যের জন্ম দিয়ে থাকে। মজার ব্যাপার হলো—বেলা গড়ালে এবং রোদের তাপ বাড়তে থাকলে সেই কুয়াশা উধাও হয়ে যায়।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) চা বাগানের প্রথম সকালটা ছিল মৃদু কুয়াশায় ভরা। দূরে চোখ যেতেই দেখা মেলে শীতার্ত প্রাকৃতিক দৃশ্যের। চা গাছের পাতায় জমেছে শিশিরকণা। পাকা সড়ক থেকে নেমে চা বাগানের চা গাছেদের অন্তঃপুরে যেতে চায় মন। কিন্তু এখানেই রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কড়া নিষেধাজ্ঞা। শ্রীমঙ্গল শহর পর্যটন নগরী হওয়ায় প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে এসে চা গাছ দেখে তার নিবিড় স্পর্শ নিতে চান আপন হাতে। ফলে ঝুঁকির মুখে পড়ে চা বাগানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্প্রতি সেই নিরাপত্তা আরও কড়া করে আরোপ করা হয়েছে শহরঘেঁষা প্রতিটি চা বাগানে। কিন্তু পর্যটকের হৃদয়চক্ষে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার সাধ্য কার?

যারা পরিবেশের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন, সেসব পর্যটকের জন্যই অধীর আগ্রহে সৌন্দর্য মেলে ধরেছে চা বাগানের হেমন্তের সকাল।

শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, বুধবার শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। মঙ্গলবার এখানকার তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শ্রীমঙ্গলের তাপমাত্রা এখন থেকে ধীরে ধীরে কমতে শুরু করবে এবং শীত অনুভূত হতে থাকবে বলে জানান তিনি।