- অক্টোবর ২৯, ২০২১
- রাজনীতি
- 374
নিউজ ডেস্কঃ গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, বাড়িতে আর বসে থাকা যাবে না। রাজপথ দখল করতে হবে। তাহলে জনগণের মালিকানা ফিরে পাওয়া যাবে। দেশকে আত্মসাৎ করা হয়েছে। সেই দেশকে জনগণের নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। রাজপথে নেমে দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
শুক্রবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে গণসংহতি আন্দোলনের চতুর্থ জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. কামাল বলেন, দেশে যেখানে জনগণের সরকার থাকার কথা, সেখানে জনগণ ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত। যে সরকার এখন ক্ষমতা প্রয়োগ করছে, তারা জনগণের আস্থাভাজন নয়, জনগণের কাছ থেকে ক্ষমতার দায়িত্ব পায়নি। কিন্তু তারা ক্ষমতা প্রয়োগ করে যাচ্ছে। দেশে ষোলো আনা স্বৈরতন্ত্র বিরাজ করছে। তাই দেশকে বাঁচাতে হবে। কোনো কিছু জনগণের নিয়ন্ত্রণে নেই।
জনগণ মানসিকভাবে প্রস্তুত আছে জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি বলেন, যে অবস্থা বিরাজ করছে, মানুষ সহ্য করতে পারছে না। মানুষ উদ্বিগ্ন। পরিবর্তন আনতে হবে, তা আনতে হলে একমাত্র উপায় হলো জনগণের ঐক্য। মানুষের মধ্যে ঐক্য আছে। একে এখন আনুষ্ঠানিক রূপ দিতে হবে। মাঠে নামলেই ঐক্যের সেই শক্তির সৃষ্টি হবে।
দেশে এখন ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে উল্লেখ করে ড. কামাল বলেন, এই অবস্থায় দেশকে রাখা যাবে না। গণবিরোধী যে শক্তি দেশ দখল করে আছে, তাদের নিয়ন্ত্রণ থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে। জনগণ যখন ঐক্যবদ্ধ হয়, তখন কোনো শক্তি সামনে দাঁড়াতে পারে না। সেই ঐক্যের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। জনগণ এখন জাগ্রত।
রাজপথ দখলে রাখার আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, মানুষ প্রস্তুত হয়ে আছে। ডাক পেলেই লাখ লাখ মানুষকে পাশে পাওয়া যাবে।
জাতীয় সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের অধীনে কিছুই করা যাবে না। এই মুহূর্তে রাজপথ দখল করতে পারলে এক বছরের মধ্যে এই সরকার যাবে।
নিজেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একজন ভক্ত উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, তাঁকে তিনি স্নেহ করেন। তবে প্রধানমন্ত্রীর ফিনল্যান্ডে চার্টার্ড বিমান নিয়ে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই কোটি টাকা পকেটে না ঢুকলেও নিয়ম মানেননি বলে খালেদা জিয়া জেলে আছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর অপচয়টাও দুর্নীতির মধ্যে পড়ে।
বর্তমান সরকারের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার কথা উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আন্দোলন একমাত্র পথ। রাস্তাই একমাত্র পথ ও মুক্তি। প্রধানমন্ত্রীকে সাবধান হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সম্মেলনে অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদের লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়। সেখানে তিনি বলেন, দেশের ওপর মেয়াদোত্তীর্ণ সরকার চেপে বসে আছে। সব অধিকার হরণ করেছে তারা। মানুষের লড়াই শক্তিশালী করা এখন গুরুত্বপূর্ণ।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলাই ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তির পথ। যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা মিথ্যুক ও প্রতারক। তাঁদের উন্নয়নের মিথ ও ভন্ডামিকে পরাজিত করতে একটি কর্মসূচি দিতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এই সরকার জাতীয় ঐক্য ভেঙে দিয়ে রাজনীতিকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। এই সরকার থেকে মুক্তি পাওয়া ছাড়া দেশের মানুষের সামনে আর কিছু নেই।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক হাসনাত কাইয়ুমসহ প্রমুখ।