- নভেম্বর ২২, ২০২১
- শীর্ষ খবর
- 318
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নয়টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাতটিতে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন দলের ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীরা। বিদ্রোহীদের সঙ্গে আটটিতে রয়েছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী। এটিও নৌকার প্রার্থীদের জন্য বাড়তি চাপ হিসেবে দেখছেন দলের নেতারা। আর পাঁচটিতে স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন গত নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জয়ী বিএনপির পাঁচজন চেয়ারম্যান। এ অবস্থায় নৌকার পরাজয় ঠেকাতে বিদ্রোহীদের নির্বাচন থেকে হটানোর চেষ্টা চলছে দলের পক্ষ থেকে।
এই নয়টি ইউপিতে ২৮ নভেম্বর ভোট গ্রহণ হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একজন দলীয় প্রার্থী বলেন, ‘আমরা নানা দিক থেকে চাপে আছি। এখানে জাতীয় পার্টি প্রার্থী দিয়েছে, আবার আমাদের বিদ্রোহীরা আছেন। কোনো কোনো ইউপিতে বিএনপির শক্তিশালী প্রার্থীও রয়েছেন। বিদ্রোহীদের সামলাতে না পারলে এখানে নৌকা বেশির ভাগ ইউপিতে ভালো করতে পারবে না।’
দলীয় নেতা-কর্মী ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নয়টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬৪ জন। এর মধ্যে মোল্লাপাড়া ইউপিতে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মনির উদ্দিন। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম। এর বাইরে এখানে বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হক স্বতন্ত্র এবং জাতীয় পার্টির শামীম আহমেদও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
জাহাঙ্গীরনগর ইউপিতে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুকসেদ আলী। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো. আবদুল কাদির। এই ইউপিতে জাতীয় পার্টির প্রার্থী আছেন জেলা জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক রসিদ আহমদ।
কুরবাননগর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন মো. শামস উদ্দিন। এখানে দলের বিদ্রোহী আছেন দুজন; তাঁরা হলেন মো. আফজাল নুর ও যুক্তরাজ্যপ্রবাসী মো. কোহিনুর আলম। এখানে বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল বরকত এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মোহনপুর ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির সদস্য শীতেশ রঞ্জন দাস তালুকদার। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন সাবেক চেয়ারম্যান মো. মঈনুল হক। জাতীয় পার্টির প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান নুরুল হক।
কাঠইর ইউপিতে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন মো. বুরহান উদ্দিন। তিনি গত নির্বাচনেও নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেছেন। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন আজিজুর রহমান তালুকদার ও মো. আবদুল মতিন। এই ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির প্রার্থী হলেন দলের সদর উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক মেনর।
বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘নৌকার জয়ের পথে বড় বাধা হলেন বিদ্রোহীরা। তাঁদের ব্যাপারে দলের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কিন্তু আমরা সে রকম কোনো উদ্যোগ দেখছি না।’
সুরমা ইউপিতে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুস সাত্তার। এখানে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হলেন সাবেক চেয়ারম্যান আমির হোসেন এবং তাজুল ইসলাম। জাতীয় পার্টির প্রার্থী হলেন দলের ইউনিয়ন শাখার সভাপতি সিরাজ মিয়া।
গৌরারং ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক পেয়েছেন জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছালমা আক্তার চৌধুরী। এখানে বিদ্রোহী আছেন চম্পা বেগম ও সারোয়ার আহমদ। এখানে বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ফুল মিয়া এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। এই ইউনিয়নে জাতীয় পার্টি প্রার্থী দিয়েছে দলের ইউনিয়ন শাখার সভাপতি শওকত আলীকে।
রঙ্গারচর ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মজিদ। এখানে দলের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী নেই। তবে বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল হাই স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়েছেন ফয়জুর রহমান।
লক্ষ্মণশ্রী ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হলেন মিজানুর রহমান। বিএনপির বর্তমান চেয়ারম্যান আবদুল ওদুদ স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করছেন। এখানে জাতীয় প্রার্থী প্রার্থী করেছে দলের নেতা আবদুল মান্নানকে।
জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব মো. মনির উদ্দিন বলেছেন, ‘সদর উপজেলায় আমাদের দলের শক্ত অবস্থান রয়েছে। এ কারণে আমরা আটটি ইউপিতে প্রার্থী দিয়েছি। আমাদের অবস্থান ভালো।’
সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমরা নৌকার জয় নিশ্চিত করতে দলের বিদ্রোহীদের নির্বাচন থেকে সরানোর চেষ্টা করছি।’