• মার্চ ১৩, ২০২২
  • আন্তর্জাতিক
  • 279
ইউক্রেনের বাংকারে আটকা পড়েছেন ২ বাংলাদেশি

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী মারিওপোলের একটি বাংকারে আটকে আছেন দুই বাংলাদেশি ছাত্র। যুদ্ধের কারণে তারা সেখান থেকে বের হতে পারছেন না।

আটকে পড়া দুই ছাত্রের নাম মাহমুদুল হাসান দোলন ও মেহেদি হাসান। এক মাস আগে তারা ইউক্রেনে আসেন স্টুডেন্ট ভিসায়। সম্প্রতি ইউক্রেনের যে কয়টি শহরে রাশিয়া আক্রমণ করে, তার একটি মারিওপোল অন্যতম। এটি আজোভ সাগরের উপকূলীয় শহর।

দোলনের ভগ্নিপতি পোল্যান্ড প্রবাসী মাসুদুর রহমান তুহিন বলেন, ‘গত শনিবার শেষ কথা হয়েছে। সে সময় পাঁচ ঘণ্টার ‘মানবিক করিডর’ দেওয়া হয়েছিল। তখন দোলন ও মেহেদিসহ ৪০ জন সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু মাঝপথে ইউক্রেনের সেনারা তাদের গাড়ি ঘুরিয়ে দেয়। কারণ তখন রাশিয়া সেখানে বোমাবর্ষণ করছিল। আমরাও ফোনে বোমাবর্ষণের আওয়াজ পেয়েছি’।

পরে মারিউপোলে একটি বাংকারে আশ্রয় নেন দোলন ও মেহেদিসহ অন্যরা। সেখানে পোঁছে ভগ্নিপতিকে ভয়েস মেসেজ পাঠান দোলন।

তুহিন বলেন, ‘এরপর থেকে আর কোনো যোগাযোগ নেই। ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা খুবই অমানবিক অবস্থায় সেখানে আছে। বিদ্যুৎ নেই, পানি নেই, খাবার নেই’।

পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেন বলেন, সুমি থেকে এরই মধ্যে ৯ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই দুই বাংলাদেশিকেও উদ্ধারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রসের মাধ্যমে এখন তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান সুলতানা লায়লা হোসেন।

এদিকে, দোলন ও মেহেদির পরিবারের পক্ষ থেকে দুই বাংলাদেশিকে উদ্ধারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

মারিওপোলে ভয়াবহ অবস্থা
৪ লাখ মানুষের বসবাস মারিওপোলে। বেশ কয়েকদিন ধরে এ শহর অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। সেখানে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনারা। শহরটিতে এ পর্যন্ত হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। রাশিয়ার হামলার কারণে সেখান থেকে বেসামরিক লোকজন অন্য জায়গায় সরেও যেতে পারছেন না। এরই মধ্যে অবরুদ্ধ এ শহরে রাশিয়ার চালানো ধ্বংসযজ্ঞের ছবি সামনে এসেছে।

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, মারিওপোল দখলে নেওয়ার পর ১২ দিনে রাশিয়ার গোলাবর্ষণে অন্তত ১ হাজার ৫৮২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। সিটি কাউন্সিল শুক্রবার একটি অনলাইন বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। তবে দ্য গার্ডিয়ান হতাহতের পরিসংখ্যান যাচাই করতে পারেনি।

মারিওপোলে এখন বিদ্যুৎ ও মোবাইলের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন। সেখানকার মানুষরা খাদ্য ও পানির সংকটে রয়েছেন। এর মধ্যে সেখানে একাধিকবার ‘মানবিক করিডর’ চালু করার চেষ্টা করেও ইউক্রেন প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সামরিক আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। রোববার (১৩ মার্চ) ১৮ দিনের মতো রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেনের সেনারা। এই যুদ্ধে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে ইউক্রেন।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান ও ডয়চে ভেলে