- মার্চ ১৯, ২০২২
- শিক্ষাঙ্গন
- 448
শাবি প্রতিনিধিঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হবে রোববার (২০ মার্চ)। পরেরদিন সোমবার (২১ মার্চ) থেকে শুরু হচ্ছে ক্লাস কার্যক্রম।
তবে ক্লাস শুরুর কয়েকদিন আগে থেকেই ক্যাম্পাসে চলে এসেছেন অনেক শিক্ষার্থী। অবস্থান নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল, পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ শহরের বিভিন্ন মেসে।
তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবাসিক হলগুলোতে অবস্থান নেওয়া নবীনদের ওপর শুরু হয়েছে র্যাগিং কার্যক্রম। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম ক্লাসকে সামনে রেখে উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি র্যাগিং আতঙ্ক বিরাজ করছে নবীন শিক্ষার্থীদের মাঝে।
জানা যায়, নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনকে কেন্দ্র করে কয়েক দিন ধরে র্যাগিংয়ের মতো ঘটনা ঘটছে আবাসিক হলগুলোতে। নবীনদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানার শেখানো কিংবা সিনিয়র-জুনিয়র পরিচিত পর্বের নামে চলছে র্যাগিং। এমনকি সালাম না দেওয়া, কিংবা সামান্য কোনো অজুহাতে র্যাগিংয়ের শিকার হচ্ছেন ক্যাম্পাসে সদ্য আসা নবীন শিক্ষার্থীরা। অনেক ক্ষেত্রে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মতো ঘটনাও ঘটছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শাবিপ্রবিতে র্যাগিং নিষিদ্ধ থাকলেও গত কয়েক বছরের তুলনায় এবছর র্যাগিং বেড়েছে কয়েকগুণ। এতে প্রতিনিয়ত র্যাগিং আতঙ্ক বিরাজ করছে সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রাখা শিক্ষার্থীদের মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নবীন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিন রাত হলে সিনিয়ররা আমাদের ফোন করে রুমে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর অঙ্গভঙ্গি, ইশারা-ইঙ্গিত, বিভিন্ন ধরনের হাসি-বিদ্রূপ করতে বলে। তাদের কথামত সেগুলো করতে বিলম্ব করলে অথবা করতে অস্বীকৃতি জানালে বাবা-মাকে তুলে আমাদের গালিগালাজ করে, এমনকি বিভিন্ন ধরনের হুমকিও দেওয়া হয়। এতে আমরা হলে কিংবা মেসে অনিরাপদ বোধ করছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহপরাণ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান খান বলেন, ‘হলে প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বিভিন্ন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। হলের রুমগুলো নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। হলে এ জাতীয় কোনো কিছু ঘটুক সেটা আমাদের কাম্য নয়। সেজন্য আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি। এরপরও এ ধরনের কিছু ঘটলে হলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমার হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সামিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা হলের সিনিয়রদের বলেছি, জুনিয়রদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক কিছু না করতে। এ বিষয়ে হলের শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি হল প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। ’
ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে র্যাগিং নিষিদ্ধ। এ বিষয়ে আমাদের শৃঙ্খলা কমিটি সজাগ অবস্থানে রয়েছে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ‘র্যাগিং নিষিদ্ধ’ সংবলিত ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরপরও যদি র্যাগিংয়ের মতো কিছু ঘটে, সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘বরাবরের মতো র্যাগিংয়ের ব্যাপারে আমরা জিরো টলারেন্স অবস্থানে আছি। কোথাও এ ধরনের কোন কিছু ঘটলে আশা করব তৎক্ষণাৎ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। এরূপ কোনো ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হবে। তাই শিক্ষার্থীদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাই। ’