- মে ২, ২০২২
- শীর্ষ খবর
- 331
নিউজ ডেস্কঃ সিলেট নগরীর লালদীঘি (পুরাতন) হকার্স মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পাচ্ছেন সরকারি সহায়তা। দ্রুত ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি ও প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরুপণ করার জন্য জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে শতাধিক দোকান পুড়ে যাওয়া নগরীর লালদীঘি (পুরাতন) হকার্স মার্কেট সোমবার (২ মে) দুপুর ১টার দিকে পরিদর্শনকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের এমপি ড. এ কে আব্দুল মোমেন এই আশ্বাস এবং নির্দেশনা প্রদান করেন।
পরিদর্শনকালে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবে সরকার। সবটুকু না হলেও যথাসাধ্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ আগুন লাগার পরে আমাদের ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা যেভাবে তাদের জীবন বাজি রেখে কাজ করেছেন সেটি অত্যন্ত প্রশংসার দাবিদার। এছাড়াও সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী আগুন লাগার খবর পেয়েই ছুটে এসে যে ভূমিকা রেখেছেন সেটি প্রশসংনীয়।’
এসময় পাশে থাকা সিলেট জেলা প্রশাসক মো. মজিবুর রহমানকে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ নিরুপণ করার নির্দেশ প্রদান করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এছাড়াও প্রাকৃতিক দুর্যোগকালীন সময়ে ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি প্রবেশের সুবিধার্থে হকার্স মার্কেটের গলিগুলো বড় করার নির্দেশন দেন মন্ত্রী।
পরিদর্শনকালে মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিলেট অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক শাহ দিদার আলম চৌধুরী নবেল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা শফিউল আলম জুয়েল।
এদিকে, দুঃসময়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনকে পাশে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন পথে বসে যাওয়া ব্যবসায়ীরা। তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এই কঠিন সময়ে স্যার আমাদেরকে দেখতে এসেছেন এটা অনেক বড় ব্যাপার। তাছাড়া আমাদের দিকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আশ্বাস প্রদান করেছন- এটা আমাদের জন্য অনেক বড় পাওয়া।
উল্লেখ্য, সিলেট নগরীর লালদীঘির হকার্স মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সোমবার ভোর রাত ৩টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়।
মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশ দোকান ও গলিতে। ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি টিমের সাড়ে ৩ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও ততক্ষণে পুড়ে ছাই হয়ে যায় শতাধিক দোকান। এতে প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মন্তব্য করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।
তবে এখন পর্যন্ত আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। ফায়ার সার্ভিস পরে আনুষ্ঠানিকভাবে জানাবে।
ব্যবসায়ীরা জানান, রাত ৩টার দিকে নগরীর লালদীঘির হকার্স মার্কেটের ৫ নং গলির কোনো একটি দোকানে প্রথম আগুন লাগে। মুহুর্তে সে আগুন ছড়িয়ে যায় আশপাশ দোকান ও গলিতে। সময় যত যেতে থাকে তত বাড়তে থাকে রাক্ষুসে আগুনের দাপট। খবর পেয়ে দ্রুত ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে আসে। একে একে ১৭ টিমের সদস্যরা প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে সাড়ে ৩ ঘণ্টায় সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন।
ততক্ষণে মার্কেটের ৫, ৬, ৭ নং গলির সব দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এছাড়াও ১, ৩, ৪ ও ৬ নং গলিরও কয়েকটি দোকান ভস্মিভূত হয়।
এদিকে, ভয়াবহ এমন অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর ব্যবসায়ীদের আহাজারিতে রাত থেকেই ঘটনাস্থলের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা রাত থেকেই রোদন করে কাঁদছেন, বলছেন- এখন পথে বসে গেছেন তারা। ব্যবসায়ীদের মধ্য থেকে কারো ওই মার্কেটে ১ থেকে শুরু করে ১৫টি পর্যন্ত দোকান ছিলো। আগুনে কারো কারো সব দোকানের মালামালই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।