• জুন ৭, ২০২২
  • শীর্ষ খবর
  • 252
রাস্তা নিয়ে দ্বন্দ্বে দুই প্রতিবেশীর হামলার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দুই মামলা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার তাড়ালিয়া গ্রামে চলাচলের রাস্তার জায়গা দেওয়া নিয়ে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করেছে। ২০২০ সাল থেকে চলে আসা দ্বন্দ্বের জেরে সালিস, সমঝোতা বৈঠক, দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলাও হয়েছে। তবু কোনো সমাধান আসেনি। সর্বশেষ পাল্টাপাল্টি হামলার অভিযোগ এনে দুই পক্ষই গতকাল রোববার নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেছে।

মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তাড়ালিয়া গ্রামে দক্ষিণ-পূর্বে দিকে বেশ কয়েক বছর আগে ৪৫ শতাংশ জমি কিনে বসবাস শুরু করেন জহুর আলী ও শওকত আলী নামে দুই ভাই। তাঁরা তাঁদের বাড়ির উত্তর-পশ্চিম দিক দিয়ে বর্তমানে চলাচল করে এলেও এখন বাড়ির পূর্ব দিকে একটি ঢিলা ধরনের জমির ওপর দিয়ে নতুন রাস্তা নির্মাণ করতে চান। কিন্তু এ জমির মালিক তাঁদের প্রতিবেশী সুধীর গোপ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সত্যেন্দ্র গোপ। তাঁদের পরিবারের সদস্যরা এ জমি বিক্রি করতে বা রাস্তা নির্মাণে রাজি নন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে ২০২০ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলে আসছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, একপর্যায়ে জহুর আলী ও শওকত আলী জোর করে রাস্তা নির্মাণ করতে চাইলে এ দ্বন্দ্ব আরও বাড়ে। এ নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকবার সালিস বৈঠক হয়েছে। একই ঘটনা নিয়ে ফৌজদারি তিনটি ও দেওয়ানি দুটি মামলা রয়েছে। মামলা চলমান অবস্থায় সম্প্রতি উভয় পক্ষের মধ্যে আবারও উত্তেজনা দেখা দেয়। এ বিষয়ে নবীগঞ্জ থানাকে জানানো হলে হবিগঞ্জের বাহুবল–নবীগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল খয়ের সমঝোতার চেষ্টা করেন। তিনি গত ২১ মে এলাকার জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে উভয় পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সমঝোতার মধ্য দিয়ে যেন তাঁরা বিষয়টি সমাধান করেন।

এর মধ্যে গত শুক্রবার দুপুরে সুধীর গোপ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে জহুর আলী ও শওকত আলীর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সংঘাত হয়। এ সময় সীতা রানী গোপ (৫০), সুধীর চন্দ্র গোপ (৬৫) ও শুভ্র গোপ (২৭) নামে তিনজন গুরুতর আহত হন। তাঁদের হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানা–পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

এ ঘটনায় গতকাল রোববার সুধীর গোপের ছেলে সুচিত্র গোপ বাদী হয়ে জহুর আলী ও শওকত আলীসহ সাতজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলার পাল্টা মামলা দেন জহুর আলী। এতে প্রতিপক্ষের সাত-আটজনকে আসামি করে একটি মামলা করেন।

সুধীর গোপের ছেলে ও মামলার বাদী সুচিত্র গোপ দাবি করেন, রাস্তার জমি না দেওয়ায় প্রতিপক্ষ তাঁদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এ হামলায় তাঁর মা–বাবা ও ভাই আহত হয়েছেন। পুলিশ এখন প্রতিপক্ষের মামলা দিয়ে উল্টো হয়রানি করছে। যে কারণে তাঁরা এখন বাড়িছাড়া।

এ বিষয়ে শওকত আলীর ছেলে রফিক আলী দাবি করেন, তাঁরা গত শুক্রবার জুমার নামাজ থেকে ফিরে বাড়িতে এসে দেখেন যে রাস্তা দিয়ে তাঁরা চলাচল করে আসছেন, ওই রাস্তা সুধীর চন্দ্র গোপের ছেলেরা কেটে ফেলেছেন। এ নিয়ে তাঁদের বাড়ির নারী সদস্যরা প্রতিবাদ করলে তাঁদের ওপর হামলা করেন প্রতিপক্ষের লোকজন। এ কারণে তাঁরা মামলা করেন।

নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ডালিম আহমেদ জানান, মূলত রাস্তা নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে এ দ্বন্দ্ব। কিছুদিন পরপরই তাঁদের মধ্যে সমস্যা হয়। পুলিশ, জনপ্রতিনিধি ও এলাকার বিশিষ্টজনদের নিয়ে সমঝোতার চেষ্টা করলেও সমাধান করা যাচ্ছে না। রোববার উভয় পক্ষই থানায় দুটি মারামারি মামলা করেছে।