• আগস্ট ৩০, ২০২২
  • শীর্ষ খবর
  • 239
সকাল থেকে বৃষ্টির বাধার মুখে সাঁতরে রেকর্ড গড়তে নামা ক্ষিতীন্দ্র

নিউজ ডেস্কঃ বিশ্বরেকর্ড গড়তে সিলেটের সুরমা নদীর চাঁদনীঘাট থেকে সাঁতারে নামা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য ২৪ ঘণ্টা সাঁতার কেটে প্রায় ৬৭ কিলোমিটার পাড়ি দিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৭টা ২০ মিনিটের দিকে তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলায় পৌঁছান। সকাল আটটা থেকে তিনি ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়েছেন। এ সময় তাঁর সাঁতার কাটতে সমস্যা হচ্ছিল বলে তিনি নদীতে ভেসে ছিলেন।

আজ বেলা ১১টা পর্যন্ত তিনি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা নদীর কাটাখাল এলাকায় ছিলেন। ওই সময় সেখানে বৃষ্টি হচ্ছিল। ক্ষিতীন্দ্রের সঙ্গে থাকা চিকিৎসক তপজিত ভট্টাচার্য এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বিশ্বনাথ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়ার কনসালটেন্ট।

তপজিত ভট্টাচার্য বলেন, গতকাল সকাল থেকে ক্ষিতীন্দ্র সাঁতার শুরু করার পর পানি থেকে ওঠেননি। পানিতে ভাসমান অবস্থায় তিনি খাওয়া-দাওয়া করেছেন। তিনি ফল, মধু, চা-কফি, দুধ খাচ্ছেন। কোনো ভারি খাবার খাচ্ছেন না। গতকাল সোমবার সারা রাত সাঁতারের পর আজ সকালে তিনি দোয়ারাবাজার পৌঁছেছেন। পথে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে সকাল আটটার দিকে ঝড় ও বৃষ্টির সম্মুখীন হন। এ সময় তিনি নদীর পানিতে ভেসে থাকার চেষ্টা করছেন। ঝড় ও বৃষ্টির কারণে তাঁর ঠান্ডা লেগেছে। তবে শরীরিক কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তাঁকে চা-কফি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

তপজিত ভট্টাচার্য আরও বলেন, তাঁর সঙ্গে চিকিৎসক, পুলিশ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের মুক্তিযোদ্ধারা আছেন। তিনি পানিতে রয়েছেন, বাকিরা নৌকায়। এ ছাড়া নৌকায় ক্ষিতীন্দ্রের ভাই জীতেশ বৈশ্য রয়েছেন। তিনি বড় ভাই ক্ষিতীন্দ্রের জন্য চা-কফি এবং অন্যান্য খাবার দিচ্ছেন। ফলের মধ্যে ক্ষিতীন্দ্রে আপেল ও খেজুর খাচ্ছেন। এ ছাড়া মধুও খাচ্ছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নদীর পাড়ে অনেকেই ক্ষিতীন্দ্রকে অভিবাদন জানাচ্ছেন। আজ সকালেও বৃষ্টি উপেক্ষা করে নদীতীরে বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিড় করছেন। আবার অনেকে নদীতে নৌকায় করে এসে ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে ছবি তুলে যাচ্ছেন।

বিশ্বরেকর্ড গড়তে একুশে পদকপ্রাপ্ত ৭১ বছর বয়সী বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্ষিতীন্দ্র গতকাল সিলেটের চাঁদনীঘাট থেকে সাঁতার শুরু করেছেন। অবিরাম সাঁতারে ২৮১ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ভৈরব ফেরিঘাট পৌঁছানো তাঁর লক্ষ্য। তাঁর এ উদ্যোগে সহায়তা করছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সিলেট জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক সভাপতি সুব্রত চক্রবর্তী জানান, ২৮১ কিলোমিটারের মধ্যে সুরমা নদীর ১৪৪ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার, ধনু নদের ৮৪ দশমিক ৩১ কিলোমিটার, ঘোড়াউত্রা নদীর ৩৪ দশমিক ২৭ কিলোমিটার ও মেঘনা নদীর ১৮ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার পাড়ি দেবেন ক্ষিতীন্দ্র। সাঁতার চলাকালে তিনি পানিতে খাওয়া-দাওয়াসহ যাবতীয় কাজ করবেন। সফলভাবে সাঁতার সম্পন্ন করলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের স্বীকৃতির জন্য আবেদন করা হবে।

ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্রের বাড়ি নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামে। বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক পদে থাকা অবস্থায় অবসরে যান তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিদ্যায় এমএসসি পাস করা ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র সাঁতার কেটে এখন পর্যন্ত জাতীয় পর্যায়ে চারটি পুরস্কার পেয়েছেন।