• নভেম্বর ৪, ২০২২
  • জাতীয়
  • 313
বাড়াবাড়ি তো সরকার করছে, হুমকি-ধমকিতে দমানো যাবে না: মির্জা ফখরুল

নিউজ ডেস্কঃ ‘বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে ফিরতে হবে’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাড়াবাড়ি তো সরকার করছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে। এসব হুমকি-ধমকি দিয়ে জনগণের আন্দোলন দমানো যাবে না।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। হুমকি-ধমকি দিয়ে দমানো যাবে না। যদি মনে করে থাকেন হুমকি-ধমকি দিয়ে দমানো যাবে, তাহলে ঠিক জায়গায় বাস করছেন না।

মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের আন্দোলন শুরু হয়েছে, এটা দমানোর সক্ষমতা কারও নেই। জনগণ জেগে উঠেছে, যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। আমরা এ লক্ষ্যে অটল ও অবিচল।

শুক্রবার (৪ নভেম্বর) সকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

‘বিএনপি বাড়াবাড়ি করলে খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে ফিরতে হবে’- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এ বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, উনি (প্রধানমন্ত্রী) বাড়াবাড়ির কথা বলেছেন। বাড়াবাড়ি বলতে উনি কী বলছেন তার ব্যাখ্যা উনিই দেবেন। আমরা ফাঁদে পা দেবো না। জনগণের আন্দোলন শুরু হয়েছে। এ আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে তিনি এ ধরনের কথা বলছেন। জনগণ এগিয়ে যাবে। একটাই লক্ষ্য আমাদের। আমরা লক্ষ্যে অটুট, অটল ও অবিচল আছি।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাড়াবাড়ির কথা বলছেন। বাড়াবাড়ি তো করছে রাষ্ট্র, আওয়ামী লীগ সরকার। অহেতুক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস সৃষ্টি করে রাজনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ব্যবহার করে সাংবিধানিক অধিকার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে তারা বাধা দিচ্ছে। বরিশালে আমাদের সমাবেশ, পাঁচদিন আগে থেকে পরিবহন বন্ধ, প্রাইভেটকার বন্ধ। এটাকে কীভাবে তারা ব্যাখ্যা করবেন? তারা বলেন, এটা নাকি তারা করছেন না। অথচ তারা সব জায়গায় নিয়ন্ত্রণ করছেন। এসব ভোঁতা যুক্তি দিয়ে লাভ নেই। জনগণ জেগে উঠেছে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এ উক্তি (বিএনপির বাড়াবাড়ি) থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে তারা কতটা প্রতিহিংসা পরায়ণ। তারা যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না তারা যে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না সেটাও প্রমাণিত। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে এ ধরনের উক্তি করা হয়েছে। আর এমন সময়ে প্রধানমন্ত্রী এমন উক্তি করেছেন যখন দেশে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন শুরু হয়েছে, যখন মানুষ তাদের অধিকারের জন্য আন্দোলন করছে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে। চাল, ডাল, তেলের দাম বাড়ছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) আবার চিনির দাম কেজিতে ১৪ টাকা বাড়িয়েছে সরকার। জ্বালানি সংকট তীব্র হচ্ছে। সবমিলিয়ে দেশে যখন চরম অব্যবস্থাপনা ও অর্থনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে ঠিক এমন সময় হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।

‘সরকার ভীত হয়ে বিএনপির প্রতিটি গণসমাবেশের আগে গণপরিবহন বন্ধ করে দিচ্ছে। প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে’- অভিযোগ করেন তিনি।

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, গত পরশু (বুধবার) নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের পরে বিচারপতি মানিকের গাড়িতে হামলা হয়েছে, এমনটি কেউ দেখেনি। অথচ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই রাতেই আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িতে হামলা হয়েছে। ১০-১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১১ জন রিমান্ডে আছে।

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিটা ক্ষেত্রে পদে পদে তারা দুর্নীতি করছে এবং আজকেও পত্রিকায় বেরিয়েছে, গত ১০ বছরে কানাডাতে যারা অভিবাসী হয়েছে তাদের তিনভাগের একভাগ বাংলাদেশি। অথচ বিদেশে আমাদের শ্রমিক সংখ্যা না কমলেও রেমিট্যান্স কিন্তু কমছে। রেমিট্যান্স এখন বিদেশ থেকেই বিদেশে পাচার হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে জড়িতরা তা করছেন।