- নভেম্বর ৭, ২০২২
- লিড নিউস
- 214
নিউজ ডেস্কঃ সিলেট বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেছে বিএনপি। এই হত্যাকাণ্ডের পর রোববার রাতে বিএনপি নেতারা এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করলেও এখন মত পালটেছেন তাঁরা। পাশাপাশি কঠোর কর্মসূচী দেওয়ার হুমকি দিয়েও তা থেকে সরে এসেছে বিএনপি।
গত রোববার রাতে সিলেট নগরের বড়বাজারে দুর্বৃত্তদের ছুরিকঘাতে খুন হন সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল। হত্যাকাণ্ডের পরপরই বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে সরকার দল এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। রাতেই নগরে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিক্ষোভ মিছিল থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভা উপলক্ষে নির্মিত তোড়ন, বিলবোর্ড ও ফেস্টুন ভাংচুর করা হয়। রোববার রাতে কামাল হত্যার পর ওসমানী মেডিকেল কলেজের সামনে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ সভায় সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেছিলেন, আ ফ ম কামাল হত্যার সাথে সরকার দলের সন্ত্রাসীরা জড়িত। যুবলীগ-ছাত্রলীগের ক্যাডাররাই এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। রোববার রাতের মধ্যে কামালের খুনিরা গ্রেপ্তার না হলে সোমবার সকালে কঠোর কর্মসূচী দেওয়া হবে বলেও সেসময় ঘোষণা দিয়েছিলেন কাইয়ুম।
এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথম থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল ব্যবসায়িক বিরোধের জেরে কামাল খুন হতে পারেন। এতে বিএনপির কয়েকজন জড়িত থাকতে পারেন বলে সন্দেহ করছে পুলিশ।
তবে চলমান পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে আগের রাতের নিজের বক্তব্য থেকে সরে এসে সোমবার সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, কামাল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আমরা সবাই মর্মাহত। এই হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক লেবাস দিতে চাই না। যে বা যারা জড়িত তাদের যেনো দ্রুত গ্রেপ্তার করা হয়। তবে নিরিহ কাউকে যেনো হয়রানি করা না হয়।
তিনি বলেন, কামাল হত্যার কারণে সিলেট বিএনপি আজ সকল সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করেছে। আমরা সবাই তার জানাযায় অংশ নেব। মঙ্গলবার থেকে জেলা বিএনপির তিনদিনের শোক পালন করবে। সবাই কালো ব্যাজ পরিধান করবে। কাইয়ুম বলেন, ১৯ নভেম্বর আমাদের বিভাগীয় সমাবেশ। এই সময়ের মধ্যে আসামিরা গ্রেপ্তার না হলে ২০ নভেম্বর থেকে কঠোর আন্দোলনে যাবে বিএনপি।
গতকাল সোমবার দুপুরে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আ ফ ম কামালের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তার ভাই ময়নুল হক লাশ গ্রহণ করে জালালাবাদ ইউনিয়ন আলীনগর গ্রামের বাড়ির দিকে রওয়ানা দেন। সেখানেই বাদ এশা জানাযা ও দাফন সম্পন্ন হবে।
এদিকে, সিলেটে বিএনপি নেতা আ ফ ম কামাল হত্যার ১৯ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যদিও এ ঘটনায় সন্দেহভাজন এক ছাত্রদলকর্মীকে আটক দেখানো হয়েছে। কিন্তু আটক ছাত্রদলকর্মী নামধারী যুবক ছিনতাইকারী। এ ঘটনার সঙ্গে তার কোনো যোগসূত্র পায়নি পুলিশ।
এ ব্যাপারে এসএমপির এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মো. মাইনুল জাকির বলেন, কামাল হত্যার রহস্য এখনও উদঘাটন সম্ভব হয়নি। তবে খুনিরা শনাক্ত। আমরা আশাবাদী খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তারের তথ্য দিতে পারব। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। সোমবার দুপুর ২টার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহ দাফন-কাফনের পর কিংবা আগামীকাল মামলা দায়ের করা হতে পারে।