- নভেম্বর ১৭, ২০২২
- শীর্ষ খবর
- 232
নিউজ ডেস্কঃ সিলেটে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক এলো পাশের জেলা হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জেও। বিএনপির আগের বিভাগীয় সমাবেশগুলো ঘিরে যেসব দাবিতে এই ধর্মঘট ডাকা হয়েছে, সেই একই দাবি সামনে আনা হয়েছে। বাস মালিকরা বলছেন, সড়কে অবৈধ অটোরিকশা বন্ধ করতে হবে। সঙ্গে জুড়ে দেয়া হয়েছে আরও কয়েকটি দাবি।
আগামী শনিবার সিলেটে সমাবেশের দিন ও তার আগের দিন সুনামগঞ্জ-সিলেট রুট এবং হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কেও বাস বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে। আগের রাতেই জানানো হয়, মৌলভীবাজারের বাস মালিকদের ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত।
বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে আগে ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, রংপুর এবং ফরিদপুরেও এই ধরনের পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। প্রতিবারই মহাসড়কে তিন চাকার গাড়ি বন্ধের দাবি সামনে আনা হয়েছে। তবে প্রতিবারই দেখা গেছে, বিএনপির সমাবেশ শেষ না হতেই বাস চলাচল শুরু হয়ে যায়। যে দাবিতে এই কর্মসূচি, সেগুলো নিয়ে পরিবহন মালিকরা আর কথা বলছেন না।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার সিলেটে জমায়েত হতে যাচ্ছে বিএনপির। সেখানকার বাস মালিকরাও জানিয়ে দিয়েছেন, শনিবার ভোর ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত যাত্রী বহন বন্ধ থাকবে।
অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের আগে কমপক্ষে দুই দিন বাস বন্ধ থাকলেও সিলেটে সমাবেশের আগের দিন জেলাটিতে ইজতেমা ঘোষণা হয়। ফলে সেদিন না ডেকে জমায়েতের দিন বাস বন্ধের ঘোষণা এসেছে।
তবে সুনামগঞ্জ বাস মালিক সমিতি দুই দিনই চাকা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমিতির সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া বৃহস্পতিবার দুপুরে বলেন, ‘আমাদের অনেকদিনের দাবি ছিল সিলেটের লামাকাজি এলাকার টোল দেয়া বন্ধের। তা ছাড়া সড়কে অবৈধ সিএনজি চলাচল বন্ধ করতে হবে এবং জনপ্রতিনিধি সরকার প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল আমাদের সুনামগঞ্জের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সংস্কার করে দেবে, তা-ও হয়নি।
‘তাই আগামীকাল ভোর ৬টা থেকে পরদিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে কোনো বাস চলাচল করবে না।’
বিএনপির সমাবেশের দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে জেলা মোটর মালিক গ্রপ বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত জানায়। কারণ হিসেবে তারা প্রশাসনিক হয়রানি ও অবৈধ যানবাহন বন্ধের দাবি সামনে এনেছে।
মোটর মালিক গ্রপের সভাপতি ফজলুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ সড়কে বাস চলাচলের ক্ষেত্রে নবীগঞ্জ প্রশাসন বাধা দিচ্ছে। যানজটের অজুহাতে সরকার নির্ধারিত স্থান ছালামতপুরে বাস নিয়ে যেতে দিচ্ছে না।
‘এ ছাড়া সড়কে অবৈধ যানবাহনের কারণেও বাসগুলো বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাই শুক্রবার সকাল থেকে জেলা মোটর মালিক গ্রুপের আওতাধীন সব বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে।’
বিএনপির সমাবেশের কারণে এই ধর্মঘট কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হবিগঞ্জ জেলা মোটর মালিক গ্রুপ একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। তবে এই সংগঠনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা রয়েছে। আমরা কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ডে নাই। আমরা ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে রয়েছি।’
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান শাহারীয়ার বলেন, ‘আমি যোগদানের পূর্বেই শহরে যেন বাস না ঢোকে এ জন্য ইউএনও, উপজেলা চেয়ারম্যান মহোদয় এবং পরিবহন নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে তারা যেন বাস নিয়ে শহরে প্রবেশ না করে এর জন্য অনুরোধ করা হয়। এরপরও গতকাল তারা শহরে বাস নিয়ে ঢোকার চেষ্টা করে।’
তিনি বলেন, ‘এমনিতেই শহরে প্রচুর জ্যাম থাকে। তাই কোনোভাবে শহরে বাস ঢুকতে দেয়া হবে না।’
বুধবার মৌলভীবাজার জেলায় দুই দিনের পরিবহন ধর্মঘট ঘোষণা করে জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি। এ সময় সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। ১৮ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে।