- জানুয়ারি ৪, ২০২৩
- মৌলভীবাজার
- 266
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারে হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকা ও হাওরাঞ্চলের অসহায়, দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এদিকে আজ বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা সারা দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা ছিল এ বছর শ্রীমঙ্গলে এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
জানা যায়, কয়েক দিন ধরেই গোটা জেলায় চলছে শীতের দাপট। প্রচণ্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে জনজীবন। পাশাপাশি রাতে কুয়াশার ঘনত্বও বেশি থাকছে। এই কনকনে শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বেরিয়েছে খেটে খাওয়া মানুষ। বলা চলে, পাহাড়-টিলা, হাওর, চা-বাগান অধ্যুষিত জেলা মৌলভীবাজারে শীতের প্রভাব পড়ছে প্রান্তিক জনপদ থেকে নগরজীবনে।
সদরের মৌলভী চা-বাগানের শ্রমিক সুমন গোয়ালা বলেন, ‘রাতের বেলা চা-বাগানে প্রচণ্ড ঠান্ডা পড়ে। আমাদের অনেক কষ্ট করে থাকতে হয়। সবার ঘরে চাহিদামতো গরম কাপড় নেই। সরকার থেকে যদি শীতের কাপড় বিতরণ করা হতো, তাহলে উপকার হতো।’
এদিকে হাওরাঞ্চলের জেলে, কৃষক ও শ্রমজীবী লোকজন বিপাকে রয়েছেন। শীত উপেক্ষা করেই তাঁদের খুব সকালে কাজের তাগিদে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে।
রাজনগর এলাকার কৃষক সুফিয়ান মিয়া বলেন, ‘এখন বোরো চাষের সময়, প্রচণ্ড ঠান্ডায় চাষাবাদ করতে পারছি না। সারা দিন রোদের দেখা পাওয়া যায় না, ফলে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে।’
এদিকে জেলায় বেড়াতে আসা পর্যটকেরা শীত উপভোগের পাশাপাশি পড়েছেন দুর্ভোগেও। একেবারে সকালে বের না হয়ে একটু দেরিতে বের হতে হচ্ছে তাঁদের।
পর্যটন সেবা সংস্থা শ্রীমঙ্গলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস কে দাশ সুমন জানান, এই শীতে পর্যটকদের আগমন বেড়েছে, কুয়াশা জড়ানো চা-বাগানসহ অন্যান্য স্থান ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। শীত বেশি হওয়ায় অধিকাংশ পর্যটক রোদের দেখা পাওয়ার পর বের হচ্ছেন।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে শ্রীমঙ্গলে। গতকাল তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার। আগামী ৩ দিনের পূর্বাভাস অনুযায়ী তাপমাত্রা কমতে পারে। তাপমাত্রা কমে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে।
আবহাওয়া অফিসের সহকারী কর্মকর্তা মো. বিবলু চন্দ্র দাশ বলেন, তাপমাত্রা কমায় শ্রীমঙ্গলে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। আমাদের হিসাব অনুযায়ী সামনে এখানকার শীতের তীব্রতা আরও বাড়বে।
মো. বিবলু চন্দ্র দাশ আরও বলেন, সিলেট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শীত শ্রীমঙ্গলেই রেকর্ড করা হয়। প্রকৃতি ও পরিবেশগত কারণে এখানকার ঠান্ডা সিলেটের অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশি।