- ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৩
- শীর্ষ খবর
- 278
নিউজ ডেস্ক: সিলেট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বায়ার-সেলার মিট আয়োজনের উদ্যোগ নিলেও মাঠ বরাদ্দ পাচ্ছে না সিলেটের ব্যবসায়ীদের বৃহত্তর সংগঠন দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি। এ ব্যাপারে গত কয়েক মাসে সিলেট জেলা প্রশাসকের কাছে একাধিকবার চিঠি প্রদান এবং মন্ত্রীর সুপারিশ সত্তে¡ও অনুমতি মিলেনি। বরং, অন্য একটি সাংগঠনকে নগরের উপশহর আই বøক মাঠে মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ ফেব্রæয়ারি) সিলেট চেম্বারের হলরুমে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আমরা সিলেট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বায়ার-সেলার মিট আয়োজনের লক্ষ্যে সিলেট সরকারি আলিয়া মাদরাসা মাঠ অথবা শাহী ঈদগাহস্থ শেখ রাসেল স্টেডিয়াম বরাদ্দ চেয়ে গত ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবরে পত্র প্রেরণ করি। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্র্রী, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব সুপারিশ দিয়েছেন। সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) সম্মতিপত্র দেওয়ার পরও জেলা প্রশাসক মাঠটি সিলেট চেম্বারকে বরাদ্দ প্রদান করেননি।’
লিখিত বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি আরও বলেন, ‘সিলেট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা ও বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বায়ার-সেলার মিট একসাথে আয়োজন করা গেলে এখানে ভারতের সেভেন সিস্টারের উদ্যোক্তাগণ তাদের পণ্য সামগ্রী নিয়ে যেমন অংশগ্রহণ করতে পারবেন। তেমনি স্থানীয় উদ্যোক্তাগণও তাদের উৎপাদিত পণ্য ভারতীয় আমদানিকারকদের নিকট প্রদর্শন করতে পারবেন। এতে রপ্তানি বৃদ্ধির পাশাপাশি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসায়ীক সম্পর্ক জোরদার হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও রপ্তানি বৃদ্ধিতে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার ও প্রাইভেট সেক্টরের যৌথ উদ্যোগে আমরা রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছি। প্রতিবেশি দেশ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সাথে সিলেটের বাণিজ্য সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়।’
তাহমিন আহমদ বলেন, ‘প্রতি বছর ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স ও ভারত সরকারের আমন্ত্রণে আমরা সিলেট চেম্বার অব কমার্সের পক্ষ থেকে আসাম, মেঘালয় সহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য সমূহে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন ব্যবসায়ী সম্মেলনে যোগদান করি। কিন্তু উপযুক্ত পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আমরা ভারতীয় ব্যবসায়ীগণকে সিলেটে কোন প্রোগ্রামে আমন্ত্রণ জানাতে পারি না। তাই গত নভেম্বরে মাসব্যাপী সিলেট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা এবং একইসাথে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বায়ার-সেলার মিট আয়োজনের পরিকল্পনা গ্রহণ করি।’
তিনি বলেন, ‘এ লক্ষ্যে গত ১১ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক বরাবরে পত্র প্রেরণ করি। সিলেট চেম্বারের পত্রের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর মাঠ বরাদ্দের ব্যাপারে মতামত চেয়ে পুলিশ কমিশনার বরাবরে পত্র প্রেরণ করা হয়। পুলিশের নগর বিশেষ শাখা ৬ অক্টোবর বাণিজ্যমেলা আয়োজনের জন্য শাহী ঈদগাহস্থ শেখ রাসেল স্টেডিয়াম বরাদ্দের ব্যাপারে সম্মতিপত্র প্রেরণ করা হয়। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৭ নভেম্বর মাঠ বরাদ্দের বিষয়টি বিবেচনার জন্য জেলা প্রশাসক বরাবরে সুপারিশ করেন। পরে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত ১ ডিসেম্বর যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বরাবরে মাঠটি সিলেট চেম্বারকে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সুপারিশ করেন। সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে ১৬ অক্টোবর, ৩১ অক্টোবর ও ৭ ডিসেম্বর ২০২২ জেলা প্রশাসক বরাবরে পত্র প্রেরণ করা হয়। কিন্তু জেলা প্রশাসক সিলেট চেম্বারের পত্রের কোন জবাব দেননি।’
তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের এরকম অসহযোগিতার জন্য গত ১৪ ডিসেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবরে একটি পত্র প্রেরণ করি এবং পত্রের কপি মহাপরিচালক, বাণিজ্য সংগঠন অনুবিভাগ-কে প্রেরণ করা হয়। এর প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রপ্তানি-৭ শাখা থেকে গত ২৮ ডিসেম্বর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়। তা সত্তে¡ও সিলেট চেম্বারকে মেলা আয়োজনের জন্য মাঠ বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।’
সিলেট চেম্বারকে মেলা আয়োজনে মাঠ দেওয়া না হলেও অন্য একটি সংগঠনকে শাহজালাল উপশহর ‘আই’ বøক খেলার মাঠে বাণিজ্যমেলা আয়োজনের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তাহমিন আহমদ। প্রশাসন যে ক্ষমতাবলে অন্য একটি সংগঠনকে খেলার মাঠে মেলা আয়োজনের অনুমতি প্রদান করেছেন, সেই ক্ষমতাবলে সিলেট চেম্বার অব কমার্সকে শেখ রাসেল স্টেডিয়ামে মেলা আয়োজনের অনুমতি প্রদানের দাবি জানান তিনি।