- এপ্রিল ৮, ২০২৩
- রাজনীতি
- 199
নিউজ ডেস্কঃ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমাদের মনে হয়, এ সংসদ সম্পূর্ণভাবে অকার্যকর। এ সংসদের তো কোনো গ্রহণযোগ্যতাই ছিল না জনগণের কাছে। কারণ তারা নির্বাচিত নয়, অনির্বাচিত সরকার।
শনিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে গুলশান বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতির বিদায়ী ভাষণে সংঘাত এড়াতে সংলাপের ইঙ্গিত রয়েছে …. এ সংক্রান্ত সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, এটা সম্পূর্ণভাবে সরকারের ওপর নির্ভর করে। সরকার যদি চায় যে সংঘাত এড়িয়ে সামনের দিকে যাবে, তাহলে প্রথম কাজটা করতে হবে বিরোধী দলগুলোর দাবি পূরণ করা। অর্থাৎ সরকারকে পদত্যাগ করে আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে। তারা যদি বলে আমরা পদত্যাগ করব, তত্বাবধায়ক বিষয়ে কথা বলব, তাহলে হয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, পদত্যাগ না করে সংলাপের আহ্বান করলে বিশ্বাস করার কোনো সুযোগ তো নেই। আগে পদত্যাগ করতে হবে। অথবা ঘোষণা দিতে হবে যে, আমরা পদত্যাগ করব।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতিকে সম্মান করি। কিন্তু তার হাতে তো সাংবিধানিকভাবে খুব বেশি ক্ষমতা নেই। আপনাদের মনে থাকা দরকার, যখন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সংসদে বিরোধী দলে ছিলাম, তখন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাষ্ট্রপতি কোনোটাই বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তার যে ক্ষমতা নেই। সুতরাং তিনি সংলাপের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন বলে আপনারা মনে করছেন। কিন্তু আমরা মনে করি গতানুগতিকভাবে সরকারি দলের পক্ষ থেকে তাকে যে বক্তব্য দিতে দেওয়া হয়েছে, তিনি সেটাই পাঠ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, তারপরও রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে আমার ব্যক্তিগতভাবে একটা কথা ভালো লেগেছে, তিনি বলেছেন- গণতন্ত্রবিহীন উন্নয়ন কখনও সার্বজনীন হয় না। সংঘাত, প্রতিহিংসা নিয়ে কখনও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা যায় না। এ কথাগুলো ভালো। কিন্তু তারা যেটা প্র্যাকটিস করছেন, সেখানে যে গণতন্ত্রের বালাই নেই, বরং কী করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা যায় সে বিষয়ে প্র্যাকটিস করছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল সংসদে অনেক বক্তব্য হয়েছে, এমন বক্তব্য করছেন যে মনে হবে, এটা খুব ভালো সংসদ। কিন্তু ওখানে হিসেব করলে খুঁজে পাওয়া যাবে না কয়টা মুলতবি প্রস্তাব সেখানে আছে। কয়টা জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে মুলতবি প্রস্তাব করে আলোচনা হয়েছে। যে কথাগুলো মাঝে-মাঝে জনগণের দাবি হিসেবে উঠে আসে, সেইগুলো নিয়েও সেখানে (সংসদে) আলোচনা হয়নি।
ফখরুল বলেন, আমরা প্রায় ২২টি রাজনৈতিক দল এ সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন (যুগপৎ) করছি। সেখানে আমাদের প্রধান দাবি হচ্ছে, এ সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করেছি, যুগপৎ আন্দোলনের ভবিষ্যৎ কর্মসূচি কি হতে পারে, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করেছি। চলমান আন্দোলনকে কিভাবে আরও এগিয়ে নেওয়া যায় এবং ঐক্যকে কিভাবে আরও দৃঢ় করা যায়, সেইগুলো নিয়েই আলোচনা করেছি।
বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর পুলিশ হামলা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করে দলটির মহাসচিব বলেন, হামলায় অনেকে আহত হয়েছেন। আজ আমাদের কর্মসূচিতে পুলিশ ইতোমধ্যে বিভিন্ন জায়গায় বাধা দিতে শুরু করে দিয়েছে। তারা বলছেন-কর্মসূচি পালন করতে দেবে না। তারা গণতান্ত্রিক পরিসরগুলোকে ছোট করে ফেলেছে। এইভাবে জনগণকে দমন করে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।
সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রথম থেকে অত্যন্ত গণতান্ত্রিক ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এবং এ আন্দোলনের মধ্যে জনগণ সম্পৃক্ত হচ্ছে। আগামী দিনে সেটা আরও বেগবান হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের নেতা ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লৎফুর রহমান প্রমুখ।