- এপ্রিল ১৮, ২০২৩
- মৌলভীবাজার
- 322
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারের বড়লেখায় আগর-আতর ব্যবসায়ী নাজমুল ইসলাম ও তার চাচাতো ভাইদের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করার পর উল্টো এবার তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মামলায় নিরপরাধ কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে তারা এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এ ঘটনায় হামলার শিকার নাজমুল ইসলামের স্বজনরা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন।
তাদের অভিযোগ, বসতঘরের টিনের চালে পটকা ছুড়ে ফোটানোর ঘটনায় বিচারপ্রার্থী হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বসতঘরে হামলা চালিয়ে তাদের মারধর করেছে। এখন হামলাকারীরা প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে তাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা মামলা করেছে।
গত ১৩ই এপ্রিল প্রতিপক্ষের গাজিটেকা (ষাটহাল) গ্রামের আবদুুল মানিকের স্ত্রী কুলসুমা বেগম ১০ জনের নামোল্লেখ ও ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলায় গাজিটেকা গ্রামের তফজ্জুল ইসলাম, তার চাচাতো ভাই কয়েছ আহমদ, নাজমুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, তার ভাই ছয়ফুল ইসলাম, চাচাতো ভাই আব্দুল নূর, বলাই মিয়া, শিরিন আহমদ ও চাচা নুরুল ইসলাম এবং ভাতিজা বাবর আহমদকে আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, ঘটনার সময় তফজ্জুল, কয়েছ, নাজমুল ঘটনাস্থলে থাকলেও বাকিদের কেউ তখন সেখানে ছিলেন না। প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের হয়রানির জন্য আসামি করেছে। মামলায় নিরপরাধ ব্যক্তিদের আসামি করার কারণ জানতে চাইলে বাদী কুলসুমা বেগম বলেন, ঘটনার সময় আমি ছিলাম না। তবে আমার স্বামী-সন্তানরা ছিলেন।
তারা যাদের নাম বলেছেন, আমি তাদের আসামি করেছি। তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আসামিরা আমার স্বামী সন্তানকে মারধর করেছে। উল্টো থানায় মামলা করেছে। তারাও আমার স্বামী-সন্তানসহ এলাকার নিরপরাধ ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছে।
স্থানীয় ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ এপ্রিল রাতে গাজিটেকা (ষাটহাল) গ্রামের আব্দুল মানিকের ছেলে সাঈদ আহমদ ও একইগ্রামের মৃত জয়নাল আবেদিনের ছেলে সোহাগ আহমদ গাজিটেকা গ্রামের তফজ্জুল ইসলাম ও তার চাচাতো ভাই কয়েছ আহমদের বসতঘরের টিনের চালে ছুড়ে পটকা ফোটায়। এতে ভয়ে ছোট বাচ্চারা কান্নাকাটি করে। এ ঘটনায় তফজ্জুল ও কয়েছ অভিযুক্ত সাঈদ ও সোহাগের বাড়িতে গিয়ে তাদের স্বজনদের কাছে বিচারপ্রার্থী হওয়ায় পরদিন তারা আবারও তাদের বসতঘরের চালে ঢিল ছুঁড়ে ও হুমকি প্রদান করে। পরে তফজ্জুল ও কয়েছ গ্রাম পঞ্চায়েতের লোকজনের কাছে বিচারপ্রার্থী হলে তারা বিষয়টি তারাবির নামাজের পর সমাধানের আশ্বাস দেন। এর জের ধরে গত ১২ই এপ্রিল দুপুরে আব্দুল মানিক গংদের সঙ্গে তফজ্জুল ও কয়েছ গংদের কথাকাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে প্রতিপক্ষের আব্দুল মানিক গংরা তফজ্জুল ও কয়েছের ওপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় চালায়। এসময় তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা তফজ্জুলের চাচাতো ভাই নাজমুল ইসলামকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে।
পরে হামলাকারীরা পালিয়ে গেলে স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। আহতদের মধ্যে নাজমুলের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
এঘটনায় আহত নজমুল ইসলামের বাবা নুরুল ইসলাম গত ১২ই এপ্রিল বাদী হয়ে বড়লেখা থানায় প্রতিপক্ষের ১৫ জনের নাম উল্লেখ এবং ৭-৮ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। মামলার পর পুলিশ যুবলীগ নেতা জসিম উদ্দিন ও কামরুল ইসলাম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান মুঠোফোনে বলেন, উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তারা থানায় পাল্টাপাল্টি মামলা করেছেন। তদন্তে যাদের স¤পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে।