• এপ্রিল ২০, ২০২৩
  • মৌলভীবাজার
  • 286
শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রহিম আর নেই

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক এবং শ্রীমঙ্গল পৌরসভার দুইবারের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ রহিম আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বুধবার (১৯ এপ্রিল) সিলেট মাউন্ট অ্যাডোরা হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাসায় নিয়ে আসার পথে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
মৃত্যুকালে তিনি পরিবার-পরিজনসহ অজস্র গুণগ্রাহী ও সমর্থক রেখে গেছেন।

বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) বিকেল ৩টায় শ্রীমঙ্গল ভিক্টোরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে মরহুম এম এ রহিমের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা রামনগর নিজ গ্রামের বাড়িতে বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এম এ রহিম একাধারে ছিলেন শ্রীমঙ্গল ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক এবং শ্রীমঙ্গল থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক শ্রীভূমি পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক।

তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে থেকে জানা যায়, ১৯৬৮ সালে তার নেতৃত্বে শ্রীমঙ্গলের থানা ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। ১৯৭০ সালে ৬ এপ্রিল পাকিস্তান সরকার সামরিক আইনে জয় বাংলা তথা পাকিস্তান ভাঙ্গার অভিযোগে তাকেসহ অপর তিনজনকে গ্রেফতার করে মৌলভীবাজার জেলে প্রেরণ করে। কিন্তু জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও আন্দোলনের মুখে পাক সরকার পরদিন তাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। জয় বাংলা মামলার তথা পাকিস্তান ভাঙ্গার চার আসামি মধ্যে তিনজনই শেষ হয়ে গেলেন। তাদের মধ্যে বাকি তিনজন হলেন রাসেন্দ্র দত্ত, এস এ মুজিব ও মোহাম্মদ শাহজাহান।

তিনি ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ’৭০ এর নির্বাচন সর্বোপরি ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালে ভারতে মুজিব বাহিনীর সদস্য হিসেবে ভারতের ট্রেনিং নিয়েছিলেন। তবে মুক্তিযুদ্ধে তার উল্লেখযোগ্য অবদানের পরও রহস্যজনক কারণে তিনি ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি পাননি।

১৯৮৩ ও ১৯৮৮ পরপর দুবার পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। জাতীয় সংসদে নির্দলীয় প্রার্থীদের পাস করানোর অনেক কিছুই তিনি করেছেন। ১৯৭৫ সাল থেকে শুরু করে ১৯৯০ এর গণঅভ্যুত্থান পর্যন্ত প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তার অবদান ছিল অপরিসীম।

শ্রীমঙ্গলের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে তার পক্ষপাতহীন স্পষ্ট বক্তব্য সমাজ পরিবর্তনের একটি উজ্জ্বল দিক-নির্দেশনা হয়ে থাকবে। শ্রীমঙ্গলবাসী তাঁর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত।