- জুন ১১, ২০২৩
- শীর্ষ খবর
- 124
নিউজ ডেস্কঃ সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যানসার ইউনিটের নির্মাণাধীন ভবনের নির্মাণশ্রমিক নয়ন মিয়াকে (২০) চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গতকাল শনিবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন সিলেট গণপূর্ত বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী খালেদ সাইফুল্লাহ, সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) আবুল কালাম আজাদ ও হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবিব।
তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়ে হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, যদিও বিষয়টি হাসপাতালের নয়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ঘটনার বিস্তারিত জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এরই মধ্যে ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে নির্মাণশ্রমিক নয়ন মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় এম এ জি ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত নয়ন সিলেটের বিশ্বনাথের বাসিন্দা। নয়নকে হাসপাতালে নিয়ে আসা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে নির্যাতনের শিকার আরেক শ্রমিকের তথ্য পাওয়া যায়। পরে নির্মাণাধীন ভবন থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় আইয়ুব আলী নামের ওই শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আইয়ুব আলী বলেন, নয়ন মারা যাওয়ার আগে পানি চেয়েছিলেন। কিন্তু নির্যাতনকারীরা তাঁকে পানি পর্যন্ত দেননি।
এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে নয়নের বাবা আবদুল জলিল বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার পর আটক পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন কুড়িগ্রামের কচাকাটা থানার নারায়ণপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম, আয়নাল, সাবান আলী, দিনাজপুরের বিরল উপজেলার তেঘরা গ্রামের রুবেল মিয়া ও বগুড়া শিবগঞ্জের আবদুর রাজ্জাক।
ভবনে কাজ করা ফজলুল হক নামের এক নির্মাণশ্রমিক বলেন, নির্মাণাধীন ভবনে ঠিকাদারের লোকজন থাকেন। তাঁদের ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আর মুঠোফোন চুরির অভিযোগ এনে গতকাল সকাল ছয়টার দিকে একটি কক্ষের দরজা বন্ধ করে নির্যাতন করা হয়। শুধু সন্দেহের জেরে নয়ন ও আইয়ুব আলীকে নির্যাতন করা হচ্ছিল। নয়ন গত বৃহস্পতিবার থেকে নতুন কাজ শুরু করেছিলেন। আর তাঁকে এনেছিলেন আইয়ুব আলী।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের ভবনটি নির্মাণ করছে এম জামাল অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি সিলেট সিটি করপোরেশনের ১২তলা ভবনও নির্মাণ করছিল। ৩ জুন সিটি করপোরেশনের নির্মাণাধীন ভবনের ওপর থেকে লোহার পাইপ নিচে পড়ে সিটি সুপারমার্কেটের ভেতরে থাকা এক সেনাসদস্যের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে করা মামলায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিককে আসামি করা হয়।