• সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩
  • লিড নিউস
  • 118
সিলেট বিভাগের চার জেলায় সড়কে প্রাণ গেল ছয় জনের

নিউজ ডেস্ক: সিলেট বিভাগের চার জেলায় গত ছয় ঘন্টায় সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা কারণে মারা গেছেন ছয়জন। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে সড়কে প্রাণ গেছে ৬ জনের। এর মধ্যে ৫ জন মারা গেছেন দুর্ঘটনায়। আর একজনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল অবসরপ্রাপ্ত বিজিবি সদস্য নয়ন মিয়ার। তিনি উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মামনপুর (মোহাম্মদপুর) গ্রামের মৃত নুরুল আমিনের ছেলে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার দোয়ারাবাজার-বোগলাবাজার সড়কের মোল্লাপাড়া পয়েন্টে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নয়ন মিয়া স্থানীয় বোগলাবাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে পিছন থেকে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। এসময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে দোয়ারাবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠান। গুরুতর অবস্থায় সেখান থেকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে রেফার করা হয়। পথিমধ্যে উপজেলা সদরের নৈনগাঁও গ্রামে পৌঁছামাত্র মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। ঘটনাস্থল থেকে মোটরসাইকেল চালক ফজলুল করিমকে (২৩) আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। তিনি উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের ভাঙাপাড়া গ্রামের আব্দুস শহিদের ছেলে। দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সিলেট মহানগরের এয়ারপোর্ট থানাধীন ফাজিল চিশত এলাকায় ফুটপাত থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৫টার দিকে ফাজিল চিশতের স‍্যামসাং শো-রুমের সামনে থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। মৃত ব্যক্তির নাম উত্তম। তিনি সিলেটের জালালবাদ থানাধীন করেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বলে জানা গেছে। স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানাপুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।

এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মইন উদ্দিন শিপন লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন- প্রাথামিকভাবে জানতে পেরেছি, ওই ব্যক্তি মানসিক ভারসাম্যহীন। তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। তবু মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হতে লাশে ময়না তদন্ত করা হবে।

সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের চারখাই এলাকায় ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ফখরুল ইসলাম (৪৫) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ফখরুল সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নের পারকুল বড়বাড়ির মৃত রইছ মিয়ার ছেলে। তিনি রাজাগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফখরুল ইসলাম কানাইঘাট থেকে সিএনজি অটোরিকশাযোগে সিলেট শহরে আসছিলেন। রাত ৮টার দিকে অটোরিকশাটি সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের চারখাই বাজার এলাকায় আসলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে গুরুতর আহত হন ফখরুলসহ তিনজন। আহতদের উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে ফখরুল ইসলাম মারা যান। আহত বাকি দুজন ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সিলেট জেলার ওসমানীনগরের তাজপুরে প্রাইভেট কারচাপায় মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের তাজপুর এলাকার ইলাশপুরস্থ ভার্ড চক্ষু হাসপাতালের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কামালবাজার এলাকার শুক্কুর আলীর স্ত্রী সালাম বেগম (৫২) ও তার ছেলে আব্দুল কাইয়ুম (৩২)। তারা ভার্ড চক্ষু হাসপাতালের পাশে একটি বাসায় ভাড়াটে থাকতেন। ঘটনার সময় রাস্তা পার হতে গিয়ে তারা বেপরোয়া গতির প্রাইভেট কারের নিচে চাপা পড়েন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো গ- ২৯-০৫৫) রাত সাড়ে আটটার দিকে ভার্ড চক্ষু হাসপাতালের সামনে গেলে মহাসড়ক পার হতে থাকা সালমা ও তার ছেলেকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। খবর পেয়ে তাজপুর ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ দুটি উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল হাসপাতলে প্রেরণ করে। দুর্ঘটনা ও নিহতের বিষয়টি সিলেটভিউকে নিশ্চিত করেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা ওসমানীনগর থানার এস.আই সবিনয় বৈদ্য।

হবিগঞ্জের ইকরাম আঞ্চলিক সড়কে যাত্রীবাহি টমটম উল্টে চান মিয়া (৫৫) নামে এক যাত্রী নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ জন। তাদেরকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত চান মিয়া জেলার বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে। স্থানীয়রা জানান, শহরের আলম বাজার থেকে একটি টমটম যাত্রী নিয়ে ইকরাম উত্তর সাঙ্গরের উদ্যেশ্যে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে টমটমটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। এতে চান মিয়াসহ ৫ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক চান মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) বদিউজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।