- ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪
- মৌলভীবাজার
- 124
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টার পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসা থেকে পড়ে মৌলভীবাজারের মির্তিংগা চা-বাগানের শিশু গৃহশ্রমিক প্রীতি উরাংয়ের (১৫) মৃত্যুর ঘটনায় উত্তাল গোটা জেলা। সচেতন মহল এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবি করছে।
প্রীতি উরাংয়ের রহস্যজনক মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবিতে রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে মির্তিংগা চা বাগানে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উরাং ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা কমিটি এবং চা শ্রমিকদের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির যৌথ উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পুরণ উরাংয়ের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য জহরলাল দত্ত, বাসদ জেলা সদস্য ও চা শ্রমিক ফেডারেশন কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ, চা শ্রমিকদের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির সমন্বয়ক এস এম শুভ, সাংবাদিক সিতারাম বিন, ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ নন্দী, প্রীতি উরাংয়ের বাবা লোকেশ উরাং ও তার মা, উরাং ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা কমিটির কমলগঞ্জ উপজেলা সাধারণ সম্পাদক পুরণ উরাংসহ প্রীতির প্রতিবেশীরা।
বিক্ষোভ সমাবেশ পরবর্তী কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বরাবর সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করে উরাং ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা কমিটি।
বক্তারা বলেন, সৈয়দ আশফাকুল হকের ঢাকার মোহাম্মদপুরের বাসার নবম তলা থেকে কয়েক মাস আগেও ফেরদৌসী নামে এক শিশু গৃহকর্মী পড়ে আহত হয়। মেয়েটির মা থানায় মামলা করলেও তার বিচার পাননি। এবার প্রীতির ক্ষেত্রে এমন ঘটনা ঘটলো।
তারা বলেন, চা শ্রমিকদের এখন সময় এসেছে, শুধু প্রীতির হত্যার বিচারেই আটকে থাকা নয়, বিচারের দাবিতে শক্ত আন্দোলন গড়ে তোলার সঙ্গে চা শ্রমিকদের সামগ্রিক জীবনমানের উন্নয়নের জন্য তীব্র আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া। আর কোনো চা শ্রমিকের সন্তান যেন শিক্ষাজীবন থেকে ঝরে না পড়ে। সঙ্গে জীবন-জীবিকার উন্নয়নে মজুরি বৃদ্ধির লড়াই আরও শক্তিশালী করতে হবে।
প্রীতির বাবা-মা সমাবেশে বলেন, ঢাকায় গিয়ে মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ শুনি। সেখান থেকে মেয়ের মরদেহ নিয়ে বাড়ি চলে আসি। আমরা আমাদের মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
এর আগে গত শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের চৌমুহনা এলাকায় সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রীতি উরাংয়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানানো হয়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকালে মোহাম্মদপুরের শাজাহান রোডের বহুতল বাড়ির নিচতলা থেকে গৃহকর্মী প্রীতিকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ওই ভবনের নবমতলায় থাকেন ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক।
প্রীতির মৃত্যুর ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়ে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন। পুলিশ সেখানে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
এর আগে গত বছরের ৫ আগস্ট সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসা থেকেই ফেরদৌসী নামে সাত বছর বয়সী এক গৃহকর্মীকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ওই ঘটনায়ও সৈয়দ আশফাকুল হকের নামে মামলা হয়েছিল।