• এপ্রিল ৩, ২০২৪
  • মৌলভীবাজার
  • 106
জুড়ী ট্র্যাজিডি: তিন কর্মকর্তা বরখাস্ত, চাকুরিচ্যুত একজন

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজারে জেলার জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালবাড়ী গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যুর ঘটনায় তিন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত এবং একজনকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

বুধবার (০৩ মার্চ) পল্লী বিদ্যুতের মৌলভীবাজার সমিতি (মৌপবিস) আঞ্চলিক কার্যালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) ভোরে মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পূর্ব গোয়ালবাড়ি এলাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু হয়। তাদের ঘরের ওপর দিয়ে টানানো হয়েছিল ১১ হাজার ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন।

নিহতরা হলেন ফয়জুর রহমান (৫০), তার স্ত্রী শিরি বেগম (৪৫), মেয়ে সামিয়া (১৫), সাবিনা (০৯) এবং একমাত্র ছেলে সায়েম (৭)।

ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মাথায় বুধবার (২৭ মার্চ) ভোরে ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পৌঁছার অল্প কিছুক্ষণের মাথায় তাদের পরিবারের ছোট মেয়ে সোনিয়াও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

মৌপবিস সূত্র জানায়, দায়িত্বে অবহেলার দায়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- পূর্ব গোয়ালবাড়ী এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা পল্লী বিদ্যুতের বড়লেখা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক সোহেল রানা চৌধুরী, সহকারী মহাব্যবস্থাপক আশরাফুল হুদা ও জুড়ী কার্যালয়ের ইনচার্জ রেজাউল করিম তালুকদার। আর শিক্ষানবিশ লাইনম্যান মো. আশিক মিয়াকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তাদের মধ্যে সোহেল রানা চৌধুরীকে সিলেটে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়, আশরাফুল হুদাকে কুমিল্লার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয় ও রেজাউলকে বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।

মৌপবিস মহাব্যবস্থাপক এ বি এম মিজানুর রহমান বলেন, এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি পুরো দেশকে নাড়া গিয়েছে। এ ঘটনা পরপরই আমাদের প্রধান কার্যালয় থেকে প্রধান প্রকৌশলী বিশ্বনাথ সিকদারের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটি ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়। সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে চার কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ওই দুর্ঘটনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল সে জায়গার মালিক ছিলেন রহম আলী। আমরা ২০২২ সাল থেকে সেখানে একটি স্থায়ী বৈদ্যুতিক ঘুঁটি লাগানোর জন্য চাপ দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু তার ঘোর আপত্তির কারণে সেটি আর আমরা করতে পারিনি। এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা বিষয়টি জানেন। পরে তার মৃত্যু হলে সেখানেই ফয়জুর রহমান ও তার পরিবার বসবাস করতে শুরু করেন। তিনিও ঘুঁটিটি স্থাপনে আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। সেই ভোরে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইনের ইনসুলেটর ক্রেক করে এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল।