• মে ৩০, ২০২৪
  • শীর্ষ খবর
  • 65
‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা’

নিউজ ডেস্ক: মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৩ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করেছে সিলেট জেলা বিএনপি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট কেন্দ্রীয় সাহিত্য সংসদের শহীদ সোলেমান হলে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আজ থেকে ৪৩ বছর পূর্বে শহীদ জিয়া চলে গেছে। সিলেটের সাথে শহীদ জিয়ার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে। স্বাধীনতার ঘোষনা দেয়ার পর তাঁর নেতৃত্বেই সম্মূখ সমরে সিলেটকে মুক্ত করেছিলেন। তিনি সিলেটে কেবিনেট সভা করেছিলেন। তিনি হেঁটে হেঁটে বালাগঞ্জে ঘুরে ছিলেন। একজন চৌকস রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার পরও তিনি অত্যন্ত সাধারণ জীবনযাপন করতেন।

সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ১৯৭১ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষনার মধ্যদিয়ে দেশের মুক্তিকামী মানুষ প্রতিরোধ যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। পরবর্তীতে দেশ ও জাতীয় এক ক্রান্তিলগ্নে তিনি দেশের হাল ধরেন। রাষ্ট্রপরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তন করেছিলেন। দেশ গঠনে ১৯ দফা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তিনি একটি সুখি, সমৃদ্ধ ও স্বনির্ভর বাংলাদের গড়ার কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ১৯৮১ সালের ৩০ শে মে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যরা বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেয়। বাংলাদেশ প্রতিটি ইঞ্চি ইঞ্চি মাটিতে শহীদ জিয়া স্মৃতি জড়িয়ে আছে। তাই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গাঁথা।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘোষনার মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, তিনি রাষ্ট্রের দায়িত্ব নিয়ে বাকশালে দেশের হারানো গণতন্ত্র তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর নেতৃত্বেই স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু হয়েছিল। আজ ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে, শহীদ জিয়ার অর্জনকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। যতই চেষ্টা করা হউক না কেন বাংলাদেশ মানুষের হৃদয় থেকে শহীদ জিয়ার নামকে মুছে ফেলা যাবে না।

আলোচনা সভায় শহীদ জিয়ার কর্মময় জীবনের উপর আলোচনায় অংশ নেন- সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক ডা. শামিমুর রহমান, সিলেট জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি এডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক, ড্যাব সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম, সদস্য সচিব ডা. শাহনেওয়াজ চৌধুরী, শাবিপ্রবির শিক্ষক প্রফেসর আতিকুল হক ও প্রফেসর ড. খালিদুর রহমান, সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সামিয়া চৌধুরী, জেলা যুবদলের সভাপতি এডভোকেট মুমিনুল ইসলাম মুমিন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব শাকিল মোর্শেদ, জেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক লোকমান আহমদ, অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট মোস্তাক আহমদ, সিলেট সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ফজলে আহসান রাব্বি, সিলেট মহানগর শ্রমিক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবের আহমদ, জেলা ছাত্রদল নেতা আব্দুস সালাম টিপু, মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল ইসলাম।

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক ডা. শামিমুর রহমান বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান একজন ধৈর্যশীল নেতা ছিলেন, তিনি দীর্ঘ সময় ধরে সবার কথা শুনতেন। শহীদ জিয়া সিলেট সার্কিট হাউসে এসে কেবিনেট মিটিং করেছিলেন। মিটিং শেষে আমি সহ দুইজন শহীদ জিয়ার সাথে দেখা করলাম। বললাম আমরা আপনার সাথে ১ মিনিট কথা বলতে চাই। আমরা দুইজন উনার সাথে এাকান্তে কথা বললাম। আমরা মেডিকেল সংক্রান্ত একটি বিষয় নিয়ে কথা বললাম। পরবর্তীতে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই সিদ্ধাত চলে আসল প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে। দেশের কৃষক, শ্রমিক সহ তিনি সর্বস্তরের তৃণমুলের মানুষদের সাথে কথা বলতেন, সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতেন। ১৯৭৪ সালের ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের পর মাত্র কিছু দিনের মধ্যেই তিনি দেশকে খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ করে চাল বিদেশে রপ্তানি করেছিলেন। তারা জাদুঘর থেকে শহীদ জিয়ার মেডেল সরিয়ে দিয়েছে, বিমানবন্দরের নাম পরিবর্তন করেছে, তারা মানে করেছে মানুষের হৃদয় থেকে শহীদ জিয়াকে মুছে দিবে। লেলিনকে যেভাবে রাশিয়া থেকে আলাদা করা যাবেনা, গান্ধিকে যেভাবে ভারত থেকে আলাদা করা যাবে না, ঠিক সেভাবেই বাংলাদেশ থেকে শহীদ জিয়ার নাম মুছে ফেলা যাবে না।

ড্যাব সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালে দিশেহারা জাতিকে স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছিলেন। এখন সময় এসেছে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করা। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।

আলোচনা সভা শেষে বাদ জোহর হযরত শাহজালাল (র.) এর দরহাগ প্রাঙ্গণে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

মোনাজাতে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর আত্নার মাগফেরাত কামনা, বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের সুস্থতা কামনা করে মোনাজাত করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।

উক্ত কর্মসূচিসমূহে সিলেট জেলা বিএনপি, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।