• জুন ৮, ২০২৪
  • মৌলভীবাজার
  • 105
চব্বিশ ঘণ্টায় একটি কুকুড় কামড়ালো ২৪ জনকে!

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পৌরশহর ও শহরতলিতে দুইদিনে বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণ এবং কামড়ে শিশু ও বৃদ্ধসহ ২৪ জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার (৭ জুন) সকাল ৯টা থেকে শনিবার (৮ জুন) দুপুর এসব ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- শ্রীমঙ্গল উপজেলার সাতগাঁও ইউনিয়নের আলিসারকুল গ্রামের সিতারাম এর পুত্র গজানন্দ (৬৭), শহরতলীর লালবাগ এলাকার রাজেলা রায় এর পুত্র ঝন্টু (১২), সবুজবাগ এলাকার কামিনি চন্দ ছেলে শ্রীকান্ত চন্দ্র (৫৮), মুসলিমবাগ এলাকার রমজান আলীর ছেলে আমান উল্লাহ (২১), পৌর শহরের মৌলভীবাজার সড়কের জুয়েল মিয়ার ছেলে রুহিত মিয়া (১০) ও রায়হান মিয়া (৫), একই এলাকার তাহের মিয়ার ছেলে শাহ আলম (৭৫), লালবাগ এলাকার রিংকু সুত্রধরের মেয়ে জয়শ্রী সুত্রধর (২৫), সিন্দুরখান ইউনিয়নের দূর্গানগর এলাকার মফিজ উল্লাহর ছেলে কেফায়েত উল্লা (৫০), পৌর শহরের মিশন রোডের নজরুল মিয়ার ছেলে আল আমিন মিয়া (১৭), লালবাগ এলাকার সমীরন শীলের ছেলে সন্দীপন শীল (৭), শহরের মিশন রোডের সুলতান মিয়ার স্ত্রী নাসিমা বেগম (৪৫), লালবাগ এলাকার লিলু মিয়ার ছেলে জিহান (৫), রামনগর এলাকার গোপাল কাহারের স্ত্রী রামরতি কাহার (৯০), শাহীবাগ এলাকার মনির মিয়ার স্ত্রী মায়া বেগম (৬০), ইসমাইল খানের ছেলে আসলাম খান (৩৯), সদর ইউনিয়নের দীনেশ চন্দ্র দেবের ছেলে দিলীপ কুমার দেব (৮৩), সবুজবাগ এলাকার নরেশ চক্রবর্তীর ছেলে শ্যমল চক্রবতী (৫০), পৌর শহরের চৌমুহনা এলাকার ব্যবসায়ী নিরঞ্জন দেব পুতুল (৭০)। কালাপুর ইউনিয়নের কাকিয়াবাজার এলাকার এক শিশুর নাম জানা যায়নি ও শহরতলীর সবুজ এলাকার বাঁধন (১০)।

আহতরা জানিয়েছেন- রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ লাল রংয়ের একটি কুকুর কামড় দেয়। কুকুরটির মুখ দিয়ে লালা ঝরছিল।

আহতদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক শিশুকে সিলেট ও তিনজনকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর আহত শিশুটির নাম পুতুল। তার পেটে আঘাত থাকায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

কুকুরের কামড়ে আহত চন্দনাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী রুহিত মিয়া জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর বাসা থেকে মৌলভীবাজার রোডের একটি দোকানে পেন্সিল কিনতে গিয়ে হঠাৎ ভয়ংকর এক কুকুরের সামনে পড়ি। কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই কুকুরটি দৌঁড়ে এসে আমার হাতে কামড় দেয়।

আরেক শিশু রায়হান মিয়া বলেন, সন্ধ্যার দিকে আমি বাসার গেটের সামনে ছিলাম। হঠাৎ কুকুরটি এসে পায়ে কামড় বসিয়ে দিয়েছে। পরে লাথি দিয়ে পা ছাড়াই।

শ্রীমঙ্গল কলেজ রোডের বাসিন্দা সিনিয়র শিক্ষক তারেক হাসান বলেন, কিছুদিন পর পরই এখানে কুকুরের কামড়ে অনেকে আহত হন। কিন্তু সংশ্লিষ্টদের কোনো টনক নড়ে না। বিষয়টি নিয়ে তিনি কৃষিমন্ত্রী , ইউএনও, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

শ্রীমঙ্গল উপজেলা ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কুকুরের কামড়ে আহত ২২ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী। তিনি জানান, কুকুরের কামড়ে আহতদের চিকিৎসা এবং ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন রয়েছে। তবে বেওয়ারিশ কুকুরকে জলাতঙ্ক রোধে প্রতিষেধক টিকা প্রদানে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের কোনো তৎপরতা দেখা দেখা যায়নি।

শ্রীমঙ্গল প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কর্ণ চন্দ্র মল্লিক জানান, প্রতিষেধক টিকা বরাদ্দ না থাকায় আমাদের কার্যক্রম চালাতে পারছি না। খুবই শিগগিরই হয়তো পেয়ে যাবো। তিনি আরও বলেন, কুকুর থেকে সতর্ক থাকার জন্য সকলকে সচেতন করতে মাইকিং করানো হবে।