• জুলাই ৮, ২০২৪
  • শিক্ষাঙ্গন
  • 41
সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ শাবি শিক্ষার্থীদের

নিউজ ডেস্ক: সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতির সংস্কার দাবিতে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

সোমবার ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর ব্যানারে বিকেল ৪ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত তারা এই মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এসময় সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।

এর আগে বেলা ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে অবস্থান কর্মসূচি করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর গোল চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে এসে শাবির ফটকের সামনে সড়ক অবরোধ করেন।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা-সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করছেন। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা ‘সারা বাংলা খবর দে, কোটা পদ্ধতির কবর দে’, ‘দেশটা নয় পাকিস্তান, কোটার হোক অবসান’, ‘আদায় হবে দাবি, পথ দেখাবে শাবি’, ‘মেধাবীদের কান্না, আর না আর না’, ‘কোটাবৈষম্য নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’, ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায়, কোটাপদ্ধতির ঠাঁই নাই’, ‘আঠারোর হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’, ‘নারী যেখানে অগ্রসর, কোটা সেখানে হাস্যকর’, ‘বৈষম্যর বিরুদ্ধে লড়াই করো এক সাথে’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ এমন স্লোগান দিতে থাকেন। এসময় শ্লোগানের পাশপাশি শিক্ষার্থীরা গান ও কবিতা পরিবেশন করছেন।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সরকারি চাকরিতে প্রবেশে কোটা পদ্ধতির সংস্কার এবং ২০১৮ সালের জারিকৃত পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে জানান।

আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, যে বৈষম্য থেকে মুক্তির জন্য দেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই বৈষম্য দূর করার জন্যই আমরা আজ আন্দোলনে নেমেছি। কোটা পদ্ধতির কারণে অযোগ্য লোকেরা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যাচ্ছে। এতে যোগ্যতাসম্পন্নরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। যার ফলে দেশে দুর্নীতি-অনিয়ম বেড়েই যাচ্ছে।

শিপার হোসেন নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আমাদের অধিকার আদায়ের জন্য আন্দোলনে নেমেছি। কোটাপ্রথা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অসাংবিধানিক। সাংবিধানিকভাবে এটি শুধুমাত্র পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য। আমাদের চারটি দাবি না মানা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলতেই থাকবে।

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল, পরিপত্র পুনর্বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সরকারি চাকুরিতে (১ম থেকে ৪র্থ শ্রেণি) সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ কোটা রেখে ‘কোটা সংস্কার’ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করা।

এদিকে, সড়ক অবরোধের কারণে সিলেট -সুনামগঞ্জ সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সোমবারের আগেশিনি এবং রোববারও এই সড়ক অবরোধ করেছিলো শাবি শিক্ষার্থীরা। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে প্রতিদিনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে ৫৬ শতাংশ কোটা প্রচলিত ছিল। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী কোটা, অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য ১০ শতাংশ কোটা, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের জন্য ৫ শতাংশ আর প্রতিবন্ধীদের জন্য ১ শতাংশ আসন সংরক্ষিত ছিল। ওই বছর কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। সে সময় কোটাব্যবস্থার সংস্কার করে ৫৬ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। পরে সে বছরের ৪ অক্টোবর কোটা বাতিলবিষয়ক পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের ৯ জুন কোটা পদ্ধতির রায় পুনর্বহাল করে হাইকোর্ট।