- আগস্ট ১০, ২০২৪
- শীর্ষ খবর
- 42
নিউজ ডেস্কঃ সিলেটের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে শনিবার (১০ আগস্ট) নগরীর লামাবাজারস্থ একটি অভিজাত হোটেলে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ।
মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন- সিলেট মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ, সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী আহসান, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জুবায়ের আহমদ জুবের ও সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন দিনার।
সভায় তারা বলেন, দেশের এই উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কিছু সুযোগ সন্ধানী কুচক্রি দুষ্কৃতিকারীরা অতীতের ন্যায় ছাত্রদলের নাম ব্যবহার করে ছাত্রদলকে কলংকিত করতে বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ এধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানান। তারা কখনোই এই সব অপকর্মকে সমর্থন করে না এবং যারা এই সব কুকর্মে লিপ্ত হচ্ছে তাদেরকে শক্ত হাতে প্রতিরোধ করতে ছাত্রদলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীকে নির্দেশ দিয়েছেন। যদি ছাত্রদলের সাথে সংশ্লিষ্ট্র থাকা কোন নেতা বা কর্মী এই সব কর্মকান্ডের সাথে জড়িত পাওয়া যায় ছাত্রদল সিলেট জেলা ও মহানগর শাখা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এমনকি আজীবনের জন্য বহিস্কার করতে বাধ্য হবে বলে জানান।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রদল বাংলাদেশের সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবসময় স্বোচ্চার এবং বাংলাদেশের যেকোন ক্রান্তি লগ্নে ছাত্রদলের প্রত্যেক নেতাকর্মী তাদের সর্বস্ব উজাড় করে সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে অঙ্গিকার বদ্ধ। তারই ফলশ্রুতিতে কোটা বিরোধী আন্দোলনে যখন আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আজ্ঞাবহ পুলিশ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের উপর নির্বিচারের গুলি বর্ষণ করেছে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল তাৎক্ষণিক ভাবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়িয়েছে এবং রাজপথে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এক সময় এই কোটা বিরোধী আন্দোলন বৈষ্যমবিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয় এবং ধীরে ধীরে অবৈধ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার প্রতি বাংলাদেশের মানুষের অনাস্থা ও ঘৃণার কারণে সেই আন্দোলন সরকার পতনের ১ দফা আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়। এই আন্দোলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কয়েকজন নেতৃবৃন্দ শহীদ হয়েছেন এবং কয়েকশত নেতৃবৃন্দ আহত ও পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন।
আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন গত ৫ই আগস্ট সাধারণ শিক্ষার্থী এবং জনতার আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে এবং শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের গণরোষের শিকার হয়ে দেশ থেকে পলায়ন করেছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের ন্যায় বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীকেও দলীয়করণের মাধ্যমে তাদের একটি আজ্ঞাবহ বাহিনীতে পরিণত করেছিলো। পুলিশ বাহিনীর কতপিয় দূর্নীতিবাজ দলদাস অফিসার হাসিনার সরকারের দাসত্ব করতে গিয়ে গত ১৫ বছর বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে ছিলো। আপনারা ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে প্রত্যক্ষ করেছেন আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ বাহিনীর সেই সব অসৎ, দলদাস পুলিশের প্রতি মানুষের ক্ষোভ। বিগত ১৫ বছরের মানুষের পুঞ্জিভুত ক্ষোভ মানুষ বিভিন্ন ভাবে আওয়ামী লীগ এবং পুলিশ বাহিনীর প্রতি প্রদর্শন করছে।
ছাত্রদল সাধারণ মানুষের ১৫ বছরের ক্ষোভ উপলব্ধি করতে পারছে কিন্তু ছাত্রদল কখনোই সহিংসতা, নৈরাজ্য, প্রতিহিংসাকে সমর্থন করে না।
ছাত্রদল সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের সর্বস্থরের নেতৃবৃন্দ এবং সিলেটের সকল নাগরিকবৃন্দকে অত্যন্ত ধৈর্য্য ও সংযমের সাথে বর্তমান পরিস্থিতিথিকে মোকাবেলা করার আহবান জানাচ্ছি। দেশটি আমাদের সকলের, আমরা সবাই মিলে দেশটিকে আবার সত্যিকার অর্থে স্বাধীন সার্বভৌম বাসযোগ্য দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্রতিহিংসায় নয় শান্তিতে বিশ্বাসী।
আমরা বিশ্বাস করি দেশের এই ক্রান্তি লগ্নে একটি সুন্দর ও গণতান্ত্রিক দেশ গঠনে অতীতের ন্যায় আগামীতেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতি আপনাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।