- আগস্ট ২২, ২০২৪
- শীর্ষ খবর
- 31
নিজস্ব প্রতিবেদক: সিলেট ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটর নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ইতোমধ্যে কুশিয়ারা নদীর চার পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ, শেওলা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও শেরপুর পয়েন্টে পানি পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। ভারতের পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় সুরমা নদীর পানিও বিপদসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পাশাপাশি অন্যান্য নদীর পানিও বাড়ছে।
এরআগে গত মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে পানি বৃদ্ধি শুরু হয়। বুধবার (২১ আগস্ট) সকাল ৬টা থেকে তিন ঘণ্টা পর পর সিলেটর প্রায় সব নদীর পানি ২ থেকে ৮ সেন্টিমিটার করে বাড়তে থাকে। তাই ভারতের পাহাড়ি ঢল বড় আকারে নামলে সিলেটে চতুর্থ দফা বন্যার আশঙ্কা করেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে সাগরে লঘু চাপের কারণে গত রবিবার থেকে সিলেটে আবার বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। তবে বর্তমানে লঘুচাপ কমে গেলেও সিলেটে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে। আজ দুপুরে কিছুটা রোদরে দেখা মিললেও এই বৃষ্টিপাত আগামীকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল মুঈদ।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, সিলেটে গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত) বৃষ্টিপাত হয়েছে ৪৫ মিলিমিটার।
ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য মতে, গত ২৪ ঘণ্টায় (বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত) ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৯৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এরআগে গত মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যার ফলে সিলেটের সবকটি নদনদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে সিলেটে বৃষ্টিপাত এবং ভারত থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে সুরমা ও কুশিয়ারাসহ বেশ কয়েকটি নদীর পানি বাড়ছে। তাই গত বন্যা পরিস্থিতিতে যাদের বাড়ি ঘরের পানি উঠেছিল তারা আবার বন্যা আতঙ্কে আছেন। সিলেট এবং ভারতে ভারী বৃষ্টি চলমান থাকলে আবার বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি পাওয়া ও ভারতের পাহাড়ি ঢলের পানি আসা শুরু হওয়ায় আবারও বন্যা আতঙ্কে দিনযাপন করছেন সিলেটের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয়ের বৃহস্পতিবারের তথ্য মতে, সিলেটের সুরমা, কুশিয়ারা সারি নদী, সারিগোয়াইন, পিয়াইন (ডাউকি) নদী, ধলাইসহ সব নদনদীর পানি কয়েক সেন্টিমিটার করে বাড়ছে। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২৬ সেন্টিমিটার, শেওলা পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে ৭৩ সেন্টিমিটার ও শেরপুর পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, সিলেটের নদনদীর পানি বৃদ্ধি ও বন্যা পরিস্থিতি নির্ভর করে ভারতের পাহাড়ি ঢলের উপর। ভারতে বৃষ্টিপাত বাড়লে আমাদের দেশে পাহাড়ি ঢল নামে এবং নদনদীর পানি বেড়ে বন্যা হয়। সীমান্তবর্তী হওয়ায় বছরে আট মাসই সিলেটে বন্যার শঙ্কা থাকে। ইতোমধ্যে সারা দেশেই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৩০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তাই আমাদের নদনদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি অব্যাহত থাকে তাহলে সিলেটে আবার বন্যার শঙ্কা রয়েছে।