- জানুয়ারি ৩০, ২০২৫
- লিড নিউস
- 2
নিউজ ডেস্কঃ প্রতি মাসে প্রায় ৩ কোটি টাকা বেশি রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকের অভিযানে স্থলবন্দরে এমন অসঙ্গতির সত্যতা পায় দুদক।
দুদক সিলেট কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জুয়েল মজুমদার ও তামাবিল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান অভিযানের নেতৃত্ব দেন। অভিযানে ছিল দুদকের চার সদস্যের একটি দল।
তামাবিল স্থলবন্দরে লোড আনলোডের তথ্য যাচাই করতে গিয়ে দুদক টিম দেখতে পায়, প্রতি এলসি আছে ৫ টনের। ট্রাকে আসছে ১০ থেকে ১২ টন পণ্য। প্রতি ট্রাক ৫ থেকে ৬ টন পণ্য বেশি আসছে। ৫ টন এলসির জন্য শুলক্ প্রদান করা হয় ২ হাজার ৮শ’ টাকা। এ টাকা প্রদান করে তারা অতিরিক্ত আনছে ৬ টন। এখানে শুল্ক ফাঁকি হচ্ছে ৩ হাজার ৩৬০ টাকা। স্থল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন চারশ’ থেকে সাড়ে চারশ’ ট্রাক আসে, সে হিসেবে প্রতিদিন ১৫ লাখ ১২ হাজার টাকা শুল্ক ফাঁকি ধরা পড়ে। হিসেব অনুযায়ী প্রতিমাসে ৩ কোটি ৩২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়।
দুদক টিমের প্রধান বলেন, আমরা মূলত এসেছিলাম লেবার হ্যান্ডেলিংয়ের বিষয়টি দেখতে। মেসার্স হোসনে আরা এন্টারপ্রাইজ কোনো কাজ না করেই গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে লেবার হ্যান্ডেলিং বাবদ ১০ কোটি ৮৭ লাখ ৬ হাজার ৪৬৯ টাকা নিয়েছেন। লেবার যেহেতু তারা সাপ্লাই করে না, আমদানিকারকরা মালামাল আনলোড করায়। তারা লেবার সাপ্লাই না করেই ১০ কোটি টাকার ৮৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে, যেটি অবৈধ। এছাড়া মালামাল লোড-আনলোড করার প্রক্রিয়ায় দেখা যায়, যে স্কেলে মাপ দেওয়া আছে, এলসিতে লেখা আছে ৫ টন। কিন্তু মালামাল আসছে, ১১ থেকে ১২ টন। অর্থাৎ ৫,৬,৭ টন বেশি আসছে।
তিনি বলেন, আমি তাদের জিজ্ঞাসা করেছি, প্রতিদিন কত ট্রাক আসে। তারা বলে সাড়ে ৪শ’ট্রাক আসে। তাহলে তাদের হিসাবে সাড়ে ৪শ’ ট্রাকে প্রতিদিন শুল্ক ফাঁকি দেওয়া হয়, ১৫ লাখ ১২ হাজার টাকা। এটা মাসের হিসাব করলে ৩ কোটি ৩২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। যা সরকারের রাজস্ব ঘাটতি। কাস্টমস কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেছে। মেসার্স হোসনে আরা এন্টারপ্রাইজ লেবার সাপ্লাই না করে যে টাকা নিয়ে যাচ্ছে, এটারও সত্যতা স্বীকার করেছে কাস্টমস। কাস্টমস বলছে, এ সিস্টেমসটা যদি না হয়, তাহলে আমদানিকারকরা ব্যবসা করবে না। তখন নাকি তাদের ব্যবসা হবে না। স্কেলে ওজনের বিষয়টি নিয়ে তাদের কোনো জবাব নেই। তারা হলেছে, হ্যাঁ, আমরা করেছি। এ সিস্টেমটা পরিবর্তন করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করবেন তারা।
তামাবিল স্থল বন্দরের সহকারি কমিশনার (এলসি স্টেশন) গৌরব মহাজন-এর মোবাইলে একাধিকবার ফোন দিলেও ব্যস্ত পাওয়া যায়।
তবে দুদক টিমের জিজ্ঞাসাবাদে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে আমদানিকারকদের কাছ থেকে অভিযোগ পায়নি তারা। পাশাপাশি পণ্য পরিবহণে অতিরিক্ত ওজন থাকলে কাস্টমস নিয়মিত মামলা দায়ের করছে বলে দাবি করা হয়। তবে একবারে পুরোপুরি ওজন করা সম্ভব হয় না।
ঠিকাদাররা আমদানিকারকদের দিয়ে কাজটা করিয়ে নেয়। যে কারণে আমদানি কারকদের প্রাপ্তি স্বীকারের প্রেক্ষিতে কাজ করিয়ে নেয়।