- ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫
- মৌলভীবাজার
- 4
মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে যারা শহীদ ও আহত হয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তা দেবে সরকার।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) মৌলভীবাজার জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের আয়োজনে অতিরিক্ত জেলা প্রাশাসক (রাজস্ব) শাহিনা আক্তারের সভাপতিত্বে বাইক্কা বিল মৎস্য অভয়াশ্রম সংশ্লিষ্ট সুফলভোগীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।
উপদেষ্টা ফরিদা বলেন, আজকে আমরা বাইক্কা বিল পরিদর্শন করেছি। জানি না কত পাখির বিরক্তির কারণ হয়েছি। কারণ আমরা জোরে জোরে কথা বলেছি। ওখানে গিয়ে হাঁটাহাঁটি করেছি এবং আমাদেরও হয়তোবা ওতটুকু যাওয়া ঠিক না। কিন্তু এটা আমাদের বুঝতে হবে যে, প্রত্যোকটা জিনিস আমাদের মেনে চলতে হবে এবং সেই মেনে চলার জন্যই আমরা এখানে কাজ করছি। এখানে আপনারা অনুরোধ করেছেন যে, ১১৮ হেক্টর স্থায়ী মৎস্য অভয়াশ্রমের সাথে আরও ৫ হেক্টর অন্তর্ভুক্ত করা যায় কি না – সেটা আমি অবশ্যই ভাবতে বলবো। এখানে আমাদের মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তারা আছেন। তারা অবশ্যই এটা করবেন।
বিল খননের ব্যাপারে ফরিদা আখতার বলেন, দারুরিয়া বিল যে খনন করার বিষয়টি এসেছে যা আমরা নিজেরা দেখে গেলাম, আর কিছু করতে না পারি একটি ছোট্ট ঘোষণা দিতে চাই দারুরিয়া বিল খননের উদ্যোগ অবিলম্বে আমরা নেবো। এটা আমরা করতে চাই কারণ, এখানে মৎস্য সংরক্ষণের একটা ব্যাপার আছে।
বিলে নেট (জাল) দেওয়া বন্ধের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, একটা জিনিস খুব কষ্ট লাগলো এটা শুনে যে, বিলের আশেপাশে নেট দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। এই যে নেটের কথাটা যে ভাই বললেন, তাকে অনেক ধন্যবাদ। কারণ, এই কথাটা সবাই ওইভাবে বলছিল না। মাছ যেতে দিচ্ছে, আর নেট (জাল) দিয়ে মাছকে ভেতরে আসতে দিচ্ছে না। এটাতো অন্যায়। মাছ একটা অবলা প্রাণী। ওরা এসে মিছিল করবে না। তাদের দাবিদাওয়া জানাবে না। কিন্তু আমরা যারা মাছের কথা বুঝি তাদের কাজ হলো এই নেট অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এই নেট একটি অন্যায় এবং অবৈধ একটি কাজ। এটির বন্ধ অবশ্যই করতে হবে।
এন্ট্রি-ফি’র (দর্শনার্থী ফি) কথাটা হয়তো আপনাদের মনোপুত হবে না, কিন্তু আমি বলতে বাধ্য – এন্ট্রি ফি টা আমরা দিচ্ছি কাকে? মানে প্রবেশের সময় একটি টিকিট কাটবে। টিকিট কাটার কারণে যে অর্থটা আসবে যেটা দিয়ে বাইক্কা বিল রক্ষণাবেক্ষণের কাজে যারা জড়িত তাদের যাতায়াতের খরচ দিতে পারবেন। এত ছোট কাজের জন্য আমরা সুদূরপ্রসারী কোনো ক্ষতির জিনিস রাখতে পারি না। তো এখানে ট্যুরিজমে একটা নিষেজ্ঞতা থাকার দরকার আছে। কারণ আজ যখন বাইক্কা বিলে আমি হাঁটতে গিয়েছি কিছু হলেও আমি দেখলাম চিপসের প্যাকেট, সিগারেটের প্যাকেট ভেতরে পাতার মাঝখানে কিন্তু ওগুলো আছে। তারমানে আপনি যতই মানুষকে ঢুকতে দেবেন তারা কিন্তু মাছের কষ্ট বুঝবে না। পাখির সৌন্দর্য দেখবে। এটা তার ব্যক্তিগত একটি আনন্দ। তার ব্যক্তিগত আনন্দের জন্য তারা অন্য জায়গায় যেতে পারে যেখানে এরূপ নিষেধাজ্ঞা নেই। এই বাইক্কা বিল যেহেতু এটা একটি বীজতলা এটাকে রক্ষা করা ও মৎস্যজীবীর জন্য, বাংলাদেশের জন্য, মাছ রক্ষার জন্য দরকার। এখানে একটু কঠোর হতে হবে। কাজেই এন্ট্রি ফি’র ব্যাপারটা ভুলে যান।
মতবিনিময় সভায় মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক জিয়া হায়দার চৌধুরী, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আব্দুর রউফ, মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হবীর, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. আরিফ হোসেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রভা রাণী, মনহর বিশ্বাস, আলেক মিয়া, সাহেলা বেগম, নোমান আহমেদ, ইয়াছিন আলী, মিন্নত আলী, আলজাফরি জসিম, মোদ্দত আলী বক্তব্য রাখেন।
এর আগে মৎস্য উপদেষ্টা বাইক্কা বিলের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন।