• ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২৫
  • লিড নিউস
  • 4
সিলেটে অফ আইটেম না কিনলে মিলছে না সয়াবিন তেল

নিউজ ডেস্কঃ সিলেটের কালীঘাট এলাকার পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্গে বাধ্যতামূলক কিনতে হচ্ছে অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য।

শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে সিলেটের কালীঘাট পাইকারি বাজারে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

কালীঘাট এলাকায় মুদি দোকানের জন্য মালামাল কিনতে এসে সিলেট নগরীর জেরজেরি পাড়ার হবিব স্টোরের মালিক বলেন, ‘অন্য অনেক পণ্য সঠিক দামে ও পরিমাণ কিনতে পারলেও সয়াবিন তেল কিনতে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এক লিটারের এক কার্টুন সয়াবিন তেল কিনতে এক বস্তা চাল কিনতে হয়েছে আমাকে। এক বস্তা চাল না কিনলে, ডিলার তেল বিক্রি করবে না। তাই বাধ্য হয়ে এক বস্তা চাল কিনতে হয়েছে।’

একই কথা জানালেন অনেক খুচরা বিক্রেতা। বেশ কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা বলেন, ‘সয়াবিন তেল কিনতে হলে ডিলাররা সঙ্গে চিনিগুড়া চাল, দুধ, ঘিসহ যে পণ্যগুলো বাজারে চলে না সেগুলো ধরিয়ে দিচ্ছে। আমরা পাড়া মহল্লার মুদি দোকানদার। এক কার্টুন সয়াবিন তেল নিতে গিয়ে চিনিগুড়া চাল নিতে হচ্ছে। কিন্তু এক বস্তা চিনিগুড়া চালের ক্রেতা তো আমাদের দোকানে নেই। সয়াবিন তেল সবার নিত্যপণ্য তাই দোকানে রাখা লাগে। এই জন্য পাইকারদের কাছ থেকে বাধ্য হয়ে তাদের শর্তে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে।’

সারা দেশের মতো সিলেটের বাজারেও গত কয়েকদিন ধরে সয়াবিন তেলের সরবরাহ সংকট চলছে। সেই সংকট এখন আরও বেড়েছে। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা যখনই পাইকারি বাজারে সয়াবিন তেল কিনতে যান তখন বিভিন্ন কোম্পানির অফ প্রোডাক্ট (বাজারে কোম্পানির যে পণ্যগুলো চলে না) সেগুলো কিনতে বাধ্য করছেন। তাই খুচরা ব্যবসায়ীরা কম পরিমাণে সয়াবিন তেল কিনছেন। এ ছাড়াও বডি রেটের চেয়ে বেশি মূল্যে সয়াবিন তেল কিনতে হচ্ছে।’

শনিবার সরজমিনে সিলেটের কালীঘাট পাইকারি বাজারে দেখা যায়, আগে যেভাবে দোকানের সামনে সয়াবিন তেল সাজিয়ে রাখতেন ডিলাররা এখন সেভাবে তেল ডিসপ্লে করছেন না তারা। প্রচুর খুচরা ক্রেতা বাজারে এসেছেন। পেঁয়াজ, রসুন, মসলাপাতি বেশ পরিমাণে কিনলেও সয়াবিন তেল খুব অল্প কিনছেন খুচরা বিক্রেতারা। ক্রেতা যে কোম্পানির সয়াবিন তেল কিনছেন তাকে সেই কোম্পানির বিভিন্ন পণ্য কিনতে বলছেন। পাইকারদের কথামতো অন্য পণ্য না কিনলে সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন না।’

নগরীর মদিনা মার্কেট এলাকার স্বপ্না স্টোরের মালিক মিশন তালুকদার বলেন, ‘পাইকারি বাজার থেকে তেল কিনতে হলে চাল, ঘি কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা খুচরা বিক্রেতারা ক্রেতাদেরকে এভাবে তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করতে পারি না। তাই দেখা যাচ্ছে, তেল বিক্রি হচ্ছে ঠিকই কিন্তু অন্য যে পণ্যগুলো কিনেছি সেগুলো দোকানেই থেকে যাচ্ছে।’

এ দিকে কালীঘাটের পাইকাররাও বলছেন একই কথা। বেশ কয়েকজন পাইকারী ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় সব কোম্পানি তেল সরবরাহ কমিয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি তেল কিনতে গেলে ওই কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন অফ প্রোডাক্ট কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। তাই পাইকরারও খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে একই নিয়মে তেল বিক্রি করছেন।’

কালীঘাট পাইকারি বাজারে মেসার্স জননী ভাণ্ডারের মালিক অলক পাল বলেন, ‘পুষ্টি কোম্পনির এক কার্টুন ৫ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে ১৩৫০ টাকা দামের ঘি কিনতে হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন অফ আইটেম কিনতে হচ্ছে। যেগুলো আমরা সচরারচর তাদের কাছ থেকে কিনি না। সেজন্য খুচরা বিক্রেতাদের কাছে আমরা তাদের প্রক্রিয়ায় তেল বিক্রি করছি। কারণ ওই অফ আইটেমগুলো না বিক্রি করতে পারলে আমার ক্ষতি হবে।’