• জুন ৪, ২০২৫
  • আন্তর্জাতিক
  • 5
এবারের হজে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ১৪ লাখ মুসলিম হাজি

নিউজ ডেস্কঃ বুধবার থেকে সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কায় শুরু হয়েছে ইসলাম ধর্মের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হজ। তীব্র দাবদাহের মধ্যেও এবারের হজে অংশ নিতে ইতোমধ্যে প্রায় ১৪ লাখ মুসলিম হাজিরা একত্রিত হয়েছেন।

মক্কার তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও বেশি, যা গত বছরের তীব্র গরমের স্মৃতি পুনরুজ্জীবিত করছে।

গত বছর প্রায় ১ হাজার ৩০১ জন হাজীর মৃত্যু ঘটে গরম ও তীব্র পরিবেশের কারণে। এবার সেই ভয়াবহতা এড়াতে সৌদি কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

হাজিরা সাদা ইহরাম পরিহিত অবস্থায় মসজিদুল হারামের কেন্দ্রে অবস্থিত পবিত্র কাবা শরিফের চারপাশে সাতবার তাওয়াফ শুরু করেন। এরপর তারা মিনায় হাজিরা যান এবং সেখানে তাঁবুতে এক রাত অবস্থান করেন।

বৃহস্পতিবার হজের মূল পর্ব আরাফাতের ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তাঁর বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন।

হজ পালনের আগে মুসল্লিদের ‘ইহরাম’ পরতে হয়। পুরুষরা দুটি সাদা সেলাইবিহীন কাপড় পরেন, যা ধনী-গরিব, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মুসলিমদের মধ্যে সাম্য ও ঐক্যের প্রতীক। নারীরা ঢিলেঢালা পোশাকে অংশগ্রহণ করেন যেখানে মুখ ও হাত ছাড়া অন্য কোনো অংশ ঢাকা থাকে।

হাজিদের সেবায় এবার ৪০টিরও বেশি সরকারি সংস্থা ও আড়াই লাখ কর্মকর্তা নিয়োজিত রয়েছেন। অতিরিক্ত ছায়াযুক্ত এলাকা ৫০ হাজার বর্গমিটার বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ৪০০টির বেশি শীতলীকরণ ইউনিট স্থাপন করা হয়েছে। হাজার হাজার মেডিকেল কর্মী দ্রুত চিকিৎসা সহায়তায় প্রস্তুত থাকবেন।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির মাধ্যমে ড্রোন ক্যামেরা ও বিশাল তথ্য বিশ্লেষণ ব্যবস্থাও যুক্ত হয়েছে, যা জনসমাগমের গতিবিধি নজরদারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

গত বছর অধিকাংশ মৃত হাজী অনিবন্ধিত ছিলেন, যাদের জন্য পর্যাপ্ত শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুবিধা ছিল না। এবার অনিবন্ধিত হাজীদের ঠেকাতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যেমন টেক্সট মেসেজ সতর্কতা, ড্রোন নজরদারি এবং নিয়মিত অভিযান।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নির্ধারিত কোটার ভিত্তিতে হজে অংশগ্রহণের অনুমতি পায়, যা লটারির মাধ্যমে বিতরণ করা হয়।

তবে অনেকে অনুমতি না পেয়ে বা ব্যয় সাশ্রয়ের কারণে অবৈধভাবে হজ পালনে অংশ নিতে চান, যাদের ধরিয়ে দেওয়া হলে গ্রেফতার ও বহিষ্কার করা হয়।

হজের ইতিহাসে ভয়াবহ দুর্ঘটনাও ঘটেছে, যার মধ্যে ২০১৫ সালের মিনায় পদদলিত হয়ে প্রায় ২ হাজার ৩০০ হাজীর মৃত্যু ছিল সবচেয়ে বড় ট্র্যাজেডি।