• জুন ২৭, ২০২৫
  • লিড নিউস
  • 3
পাথর কোয়ারি খোলার দাবিতে লাগাতার আন্দোলন শুরু

নিউজ ডেস্কঃ সিলেটে দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে মালিক ও শ্রমিকরা এবার কঠোর আন্দোলনের পথে হাঁটছে। তিন ধাপে ঘোষিত এ কর্মসূচির প্রথম ধাপ শুরু হচ্ছে কাল শনিবার (২৮ জুন) থেকে।

প্রথম ধাপে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি ও লোড-আনলোড পয়েন্টে পালিত হচ্ছে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি। দ্বিতীয় ধাপে ৩০ জুন থেকে সব ধরনের পণ্য পরিবহন ৪৮ ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকবে। তৃতীয় ও চূড়ান্ত ধাপে ২ জুলাই থেকে সিলেট জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য পরিবহন ও গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হবে। গত ২৪ জুন সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে সিলেট জেলা পাথর – সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সমাবেশ থেকে এ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষনা করা হয়। তাতে সিলেটের বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী অংশ গ্রহন করে দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষনা করেন।

২০২০ সালে পরিবেশবাদী সংগঠন বাপা, বেলা এবং অন্যান্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সিলেটের পাথর কোয়ারি এলাকাগুলোকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করে সরকার সেখানে পাথর উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় এক আদেশে দেশের অন্য এলাকাগুলোতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার হলেও সিলেটের পাঁচটি কোয়ারিতে তা এখনও বলবৎ রয়েছে।

এই নিষেধাজ্ঞায় সিলেট অঞ্চলে প্রত্যক্ষভাবে পাথর খাত নির্ভর প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। পাশাপাশি পরোক্ষভাবে প্রায় এক কোটি মানুষের জীবিকা এই খাতের সঙ্গে জড়িত থাকায় অঞ্চলজুড়ে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট।

আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানিয়ে আসলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। তাই পাথর মালিক ও শ্রমিকরা এবার জীবন-জীবিকার প্রশ্নে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন।

সিলেট জেলা পাথর মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল জলিলের মতে, শ্রমিক ও মালিকরা এ দেশেরই নাগরিক এবং তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে রাষ্ট্রের দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু সরকারের অবহেলার কারণে তারা বাধ্য হয়েছেন এই আন্দোলনে নামতে।

পাথর মালিক সমিতির নেতা শিব্বির আহমদ জানান, দীর্ঘদিন ঘরে বসে না খেয়ে দিন কাটছে শ্রমিকদের। তারা এখন জীবন রক্ষার লড়াইয়ে নেমেছে এবং দাবি আদায় করেই ঘরে ফিরবে।

লোভাছড়া নয়াবাজার পাথর মালিক সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন জানিয়েছেন, পাঁচ বছর ধরে অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। নতুন সরকার দেশের অন্যান্য খাতকে স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নিলেও সিলেটের পাথর শ্রমিক ও মালিকদের দাবিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

ইতোমধ্যে আন্দোলন সফল করতে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ কানাইঘাটসহ কোয়ারি সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে সর্বাত্মক আন্দোলন কর্মসূটি পালনের লক্ষ্যে ব্যপক প্রচারনা চালিয়েছেন।