• আগস্ট ২২, ২০২৫
  • লিড নিউস
  • 2
সাদাপাথরে হরিলুটকারী কোনো প্রভাবশালী ছাড় পাবে না: জনপ্রশাসন সচিব

নিউজ ডেস্কঃ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো: মোখলেস উর রহমান বলেছেন, সাদাপাথর শুধু লুট হয়নি, হরিলুট হয়েছে। এই ঘটনায় যারাই জড়িত, সে যত বড় দলের কিংবা প্রশাসনেরই হোক না কেন-কেউই ছাড় পাবে না।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ গঠিত উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শনকালে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, সাদাপাথর আন্তর্জাতিক মানের একটি পর্যটনকেন্দ্রে এমন ভয়াবহ লুটপাট দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। পর্যটকদের জন্য নিরাপদ ও আকর্ষণীয় পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সাদাপাথরসহ অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রকে ঘিরে বিশেষ প্যাকেজ কর্মসূচি নেওয়া হবে। পাশাপাশি সাদাপাথর এলাকা ২৪ ঘণ্টা সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে, বলেন তিনি।

অবৈধ উত্তোলন রোধে স্থায়ী নজরদারি জোরদারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন মোখলেস উর রহমান।

এ সময় খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব সাইফুল ইসলাম, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, সিলেটের জেলা প্রশাসক সারওয়ার আলমসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

তারা সাদাপাথর ঘুরে দেখেন এবং সেখানকার স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

গত ২০ আগস্ট সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর পর্যটনকেন্দ্রে পাথর লুটের ঘটনায় মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ পাঁচ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে মাঠপর্যায়ে পরিদর্শনে আসেন তারা।

কমিটি গঠন নিয়ে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে বলা হয়-সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ সাদাপাথর পর্যটন স্পট ও রেলওয়ে বাংকার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করা হয়েছে। ফলে পরিবেশ ও পর্যটন স্থানের নান্দনিকতা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে অবৈধ পাথর উত্তোলনের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি তদন্তের উদ্যোগ নেয় সরকার।

ওই অফিস আদেশে আরও বলা হয়, প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে সরেজমিন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর থেকে সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলোতে পাথর লুটপাট শুরু হয়। বিশেষ করে গত জুলাই ও আগস্টের প্রথম সপ্তাহে সাদাপাথরে নজিরবিহীন লুটপাটের ঘটনা ঘটে। সরকারি সম্পদ হরিলুটের ঘটনায় গত ১৩ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদকের ৯ সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

পরবর্তীতে ৫২ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের নামে পাথর লুটের একটি প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয় দুদক সিলেটের সমন্বিত কার্যালয় থেকে। ওই প্রতিবেদনে পাথরকাণ্ডে ৫০ জনের নাম ও পদবি পাওয়া গেছে। আছে দু’টি প্রতিষ্ঠানের নামও। এ তালিকায় নাম রয়েছে বিএনপির ২০, আওয়ামী লীগের সাত এবং জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি দুজন করে নেতার। পাথর লুটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত বিভিন্ন দলের ৪২ জন রাজনৈতিক (ব্যবসায়ী) নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

এই তালিকায় খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, কোম্পানীগঞ্জের বিদায়ী চার নির্বাহী কর্মকর্তা, সিলেটের পুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বিজিবির কর্তব্যে অবহেলার তথ্যও পেয়েছে দুদক।